সাল ১৯৯৫। গুজরাট বিধানসভা নির্বাচনে এই প্রথম জিতেছে বিজেপি। সদ্যজয়ের পর একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে দল সরকার গড়ছে। দুমাস পর রাজ্যে পুর ভোট। তোড়জোড়চলছে পুরোদমে। মোদী একদিন ডাকলেন তাঁর গুটিকয়েক বিশ্বস্ত, অদলীয় কর্মী ও সহকারীকে।তাঁদের হাতে তুলে দিলেন এক যন্ত্র, যা এর আগে তাঁরা দেখেননি জিনিসটা তিনি হালেরবিদেশ সফরে গিয়ে নিয়ে এসেছেন এক ডিজিটাল ক্যামেরা। তাঁদের কাজ হল বিজেপিরনির্বাচনী প্রচারাভিযানকারী দলগুলির সঙ্গে রাজ্যের এমুড়ো-ওমুড়ো ঘোরা এবং যা তাঁরাদেখেছেন তা ডিজিটাল রেকর্ড করে রাখা লোকজন ও তাঁদের হাবভাব, তাঁদের সাজপোশাক,অভ্যাস-আচরণ, জনসভায় ভিড়ভাট্টা, কর্মস্থলে তাঁরা কি খায়, কি খেয়ে থাকেন চায়েরদোকানে গুজরাটের মূল প্রকৃতি ডিজিটাল মাধ্যমে ধরে রাখা। ভারত তো ছাড়, এটাপাশ্চাত্যে ডিজিটাল ক্যামেরা জনপ্রিয় হয়ে ওঠারও ঢের ঢের আগেকার কথা।  

সেই ইস্তক এই অভ্যাস মোদী বজায় রেখেছেন মোড় বা বাঁকের আগে থাকা,প্রথমে সম্ভাবনা দেখে ও তারপর সর্বাধুনিক প্রযুক্তিগত ও ডিজিটাল উদ্ভাবনকে আপন করেনিয়ে, শুধুমাত্র ব্যক্তিগতভাবে নয়, শাসনের মডেল হিসেবেও। এতে অবাক বনার তাই কিছুনেই যে কেবল রাজনীতিক মহল নয়, বস্তুত বৃহত্তর সমাজেও, মোদীই প্রথম নিছক একমুখীসম্প্রচার মাধ্যম নয়, বরং সমতুল্যদের মধ্যে দুমুখী ডিজিটাল সংযোগ প্রতিষ্ঠায়সোশ্যাল মিডিয়ায় সম্ভাবনা দেখেন ও বুঝতে পেরেছিলেন। সোশ্যাল মিডিয়ার অংশভাগীরাগুজরাটের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা বা কথা বলতে পারতেন অনায়াসে। প্রধানমন্ত্রীহিসেবে, তাঁর প্রথম উদ্যোগগুলির মধ্যে অন্যতম হল ২০১৪-র জুলাইতে  MyGov  পোর্টাল-এর সূচনা মারফৎ এই সংযোগকে প্রাতিষ্ঠানিকরূপদান। এক বছর পর, সহানুভূতিশীল, স্বচ্ছ ও দায়বদ্ধ শাসন মডেলের সূচনা করে ডিজিটালভারত কর্মসূচি, যা কি না গুরুত্বপূর্ণ এক বিশেষ উদ্যোগের লক্ষণবিশিষ্ট। ক্যালিফোর্নিয়ারস্যান হোসেতে ডিজিটাল ভারত অনুষ্ঠানে তাঁর দর্শনের সারসংক্ষেপ করে মোদী বলেন, “কেউযখন সোশ্যাল মিডিয়া বা কোনও পরিষেবার তীব্র গতি ও পাল্লার কথা ভাবে, তখন তাঁকে মনেরাখতে হবে যে বহুদিন অবধি প্রায় আশা-ভরসাহীন লোকজনের জীবন বদলে দিতে পারাও একইভাবেসম্ভব। বন্ধুরা, তাইতো এই দৃঢ় প্রত্যয় বা বিশ্বাস থেকে উৎপত্তি হয়েছে ডিজিটালভারতের ধ্যানধারণা। ভারতকে বদলে দেওয়ার জন্য এই উদ্যোগ এমন এক ব্যাপক পাল্লা বামাত্রার, যা সম্ভবত মানুষের ইতিহাসে অদ্বিতীয়। ভারতের শুধুমাত্র সবচেয়ে দুর্বল,প্রত্যন্তবাসী ও গরিব নাগরিকদের জীবন স্পর্শ করা নয়, আমাদের দেশ যেভাবে জীবনকাটাবে ও কাজ করবে তার পথ পাল্টে দেওয়া