প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে এনডিএ সরকারের কাজকর্ম ভূয়সী প্রশংসা ও সাধুবাদ অর্জন করেছে বহির্বিশ্বের। যে সমস্ত নীতি বর্তমানে এ দেশে অনুসরণ করা হচ্ছে তা যে ভারতের পরিবর্তনের চাকাতে গতি সঞ্চার করেছে তা তারা স্বীকার করে নিয়েছে এক বাক্যে।

বিশ্ব ব্যাঙ্ক আশা প্রকাশ করেছে যে ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে ভারতের প্রত্যাশিত বৃদ্ধির হার ৬.৪ শতাংশ, যা কিনা ২০১৪-১৫ আর্থিক সময়কালের ৫.৬ শতাংশেরও শীর্ষে রয়েছে। বিশ্ব ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ এই ঘটনা ‘মোদীর কারণেই সম্ভব হয়ে উঠেছে’বলে ব্যাখ্যা করেছে। বিশ্ব ব্যাঙ্ক আরও বলেছে যে তেলের মূল্য পরিস্থিতি ক্রমশ নিচের দিকে নামতে থাকা সত্ত্বেও সরকার গৃহীত বিভিন্ন নীতির সুবাদে ভারতে বিনিয়োগের পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে বাধ্য।



এই ধরনের ইতিবাচক কথাই প্রতিধ্বনিত হয়েছে বিশ্ব ব্যাঙ্কের প্রেসিডেন্ট মিঃ জিম ইয়ং কিম-এর কন্ঠে। তিনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘প্রখর চিন্তাভাবনা ও নেতৃত্ব’ ভারতের জনসাধারণের আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকে সম্ভব করে তুলেছে।আর্থিক অন্তর্ভুক্তির লক্ষ্যে ভারতের জন ধন যোজনারও ভূয়সী প্রশংসা করেছেন তিনি।

আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল কর্তৃপক্ষের মতে, প্রধানমন্ত্রী মোদীর সংস্কারমূলক কর্মসূচি এবং বিশ্বের তেলের বাজারে মূল্য ক্রমশ নিম্নগতি থাকায় ভারতীয় অর্থনীতির বিকাশের হার প্রত্যাশার সীমা ছাড়িয়ে যাবে। এমনকি, তা চিনকেও অতিক্রম করে যেতে পারে বলে তাদের ধারণা ও বিশ্বাস। ভারতের এই সমস্ত সংস্কারমূলক কর্মসূচি বিনিয়োগকারীদের মনে আস্থা ও বিশ্বাস ফিরিয়ে এনেছে বলে মনে করে আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল।

অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও বিকাশ সম্পর্কিত সংস্থা, ওইসিডি, এক মত প্রকাশের মাধ্যমে জানিয়েছে যে ভারতের অর্থনৈতিক কর্মসূচি ভারতীয় অর্থনীতিকে এক দৃঢ়, নিরন্তর ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বিকাশের পথে চালিত করবে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সংস্কারমুখী উৎসাহ ও কর্মপ্রচেষ্টাই যে এর মূলে সে কথাও উল্লেখ করতে ভোলেনি এই সংস্থাটি।

আন্তর্জাতিক সংস্থা মুডি বিশ্ব র‍্যাঙ্কিং-এ ভারতের অবস্থান ও দৃষ্টিভঙ্গিকে পূর্বের ‘স্থিতিশীল’ থেকে ‘ইতিবাচক’-এ উন্নীত করেছে। এর ফলে, বিনিয়োগকারীদের মনে এ দেশের লগ্নি সম্পর্কে যথেষ্ট আশা ও বিশ্বাসের সৃষ্টি হয়েছে। বিশ্বের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে বছরের অন্তর্বর্তী এক প্রতিবেদনে মুডি জানিয়েছে যে ভারতের বিকাশের হার বর্তমান এবং আগামী বছরে ৭ শতাংশের বেশি থাকবে।

এইভাবেই সংস্কারের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী মোদীর উৎসাহমূলক কর্মসূচি এবং সচল ও গতিশীল রূপান্তর প্রক্রিয়া দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে সমগ্র বিশ্বের যার ফলে, সকলেই এখন ভারত এবং ভারতের অর্থনীতি সম্পর্কে যথেষ্টই আশাবাদী হয়ে উঠেছেন।

Explore More
PM Modi's reply to Motion of thanks to President’s Address in Lok Sabha

Popular Speeches

PM Modi's reply to Motion of thanks to President’s Address in Lok Sabha
Modi govt's next transformative idea, 80mn connections under Ujjwala in 100 days

Media Coverage

Modi govt's next transformative idea, 80mn connections under Ujjwala in 100 days
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...

২০১৪ সালের ২৬ মে ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে এমন এক বিদেশ নীতি অনুসরণ করে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার, যা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাওয়া এবং এদেশে বিনিয়োগের জন্য সমগ্র বিশ্বকে আহ্বান জানানোর নীতিতে বিশ্বাসী। শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে ভারতের বন্ধু রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে সম্পর্ক আরও নিবিড় করে তোলার পাশাপাশি অন্যান্য দেশের সঙ্গে সহযোগিতার নতুন নতুন ক্ষেত্র আবিষ্কার করেছে।

২০১৪ সালের ২৬ মে দিনটিতে প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে দর্শকের আসনে দেখা গিয়েছিল সবকটি সার্ক রাষ্ট্রের প্রধানদের। তাঁদের মধ্যে ছিলেন - আফগানিস্তানের প্রসিডেন্ট কারজাই, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী টোবগে, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইয়ামিন, নেপালের প্রধানমন্ত্রী কৈরালা, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ এবং শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রাজপক্ষ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তখন ইতিপূর্বেই নির্ধারিত এক সফরসূচিতে জাপানে থাকায় বাংলাদেশ সংসদের অধ্যক্ষ ঐ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন। পরের দিনই এই নেতৃবৃন্দের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ ধরে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা বৈঠকে মিলিত হয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।

সার্ক-কে আরও শক্তিশালী করে তুলতে শ্রী মোদীর দৃষ্টিভঙ্গি ও অঙ্গীকারের প্রতিফলন ঘটেছে বারংবার। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণের পরই তিনি প্রথম যানভুটান সফরে। সেখানে ভুটানের সংসদে ভাষণ দেওয়ার পাশাপাশি ভারত-ভুটান সহযোগিতাকে নিবিড় করে তোলার লক্ষ্যে কয়েকটি চুক্তিও সম্পাদন করেন। তিনিই ছিলেন প্রথম প্রধানমন্ত্রী, যিনি শুধুমাত্র দ্বিপাক্ষিক সফরে ২০১৪ সালে নেপালে যান। সেখানে ভারত-নেপাল সম্পর্ককে নিবিড় করে তোলার কাজ বেশ কিছুটা এগিয়ে যায়। ভারত-শ্রীলঙ্কা সম্পর্ককে অনুকূল করে তুলতে তিনি ঐ দেশ সফরে যান ২০১৫’র মার্চ মাসে। এর মাত্র কিছুদিন আগেই ঐ বছর জানুয়ারি মাসে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট হিসাবে কার্যভার গ্রহণের পর প্রথম ভারত সফরে আসেন প্রেসিডেন্ট মৈথ্রীপালা সিরিসেনা। শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী রোনিল বিক্রমসিংহেও ভারত সফরে আসেন সেপ্টেম্বর, ২০১৫-তে।

২০১৫ সালের জুন মাসে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফরকালে ঐ দেশের সঙ্গে ভারতের এক স্থল সীমানা চুক্তি সম্পাদনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পারস্পরিক সংযোগ ও যোগাযোগকে আরও গভীর করে তুলতে দু’দেশের মধ্যে বাস পরিষেবারও সূচনা হয়। ২০১৬-র এপ্রিলে প্রেসিডেন্ট ইয়ামিন-কে ভারতে স্বাগত জানান প্রধানমন্ত্রী। ভারত-মালদ্বীপ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনায় মিলিত হন দুই নেতা।

দয়িত্বভার গ্রহণের পর থেকে প্রধানমন্ত্রী বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শীর্ষ বৈঠকে যোগ দিয়েছেন। ২০১৪-র জুলাই মাসে তিনি ব্রাজিলের ফোর্টালেজায় ব্রিক্‌স শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন। সেখানে ব্রিক্‌স দেশগুলির মধ্যে সহযোগিতার ভবিষ্যৎ রূপরেখা তৈরির লক্ষ্যে তিনি মিলিত হন ব্রিক্‌স নেতৃবৃন্দের সঙ্গে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সবচেয়ে বড় ঘটনা হল ব্রিক্‌স ব্যাঙ্কের প্রতিষ্ঠা, যার নেতৃত্বে প্রথম বসানো হয় ভারতকে।

২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে প্রধানমন্ত্রী ভাষণ দেন রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ অধিবেশনে। ঐ সময়ে বিশ্বকে সমৃদ্ধ করে তোলার লক্ষ্যে কোন্‌ কোন্‌ উপায়ে ভারত অবদান সৃষ্টি করতে চায়, তা তিনি তুলে ধরেন তাঁর ভাষণে। একই সঙ্গে তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন বিশ্ব শান্তি প্রচেষ্টার ওপর। সমগ্র বিশ্বকে তিনি আহ্বান জানান বছরের একটি দিন আন্তর্জাতিক যোগ দিবস হিসেবে চিহ্নিত করার জন্য। তাঁর এই আহ্বান বাস্তবায়িত হয় ২০১৪-র ডিসেম্বর মাসে, যখন বিশ্বের ১৭৭টি রাষ্ট্র মিলিতভাবে একটি প্রস্তাব গ্রহণ করে ২১ জুন দিনটিকে আন্তর্জাতিক যোগ দিবস হিসেবে ঘোষণা করার।  

এনডিএ সরকারের আমলে জি-২০ ভুক্ত দেশগুলির সঙ্গে সম্পর্ক বেশ সুদৃঢ় হয়ে উঠেছে। শ্রী মোদী ২০১৪ সালে অস্ট্রেলিয়া এবং ২০১৫-তে তুরস্কে অনুষ্ঠিত জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন। ব্রিসবেনে আয়োজিত জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে বিদেশ থেকা কালো টাকা ফিরিয়ে আনার ওপর বিশেষ জোর দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। সেই সঙ্গে, কালো টাকার কুফল কি কি হতে পারে, তাও তিনি ব্যাখ্যা করেন বিশ্ব নেতৃবৃন্দের কাছে। শীর্ষ সম্মেলনে আলোচনা ও মতবিনিময়কালে তাঁর এই বক্তব্য ছিল খুবই প্রাসঙ্গিক ও গুরুত্বপূর্ণ। বিষয়টিকে ভারত কতটা গুরুত্ব দিয়ে থাকে তা তিনি সাফল্যের সঙ্গে তুলে ধরতে পেরেছিলেন উপস্থিত নেতৃবৃন্দের কাছে

আসিয়ান রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে সম্পর্ককে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে আসছেন প্রধানমন্ত্রী। ২০১৪ সালে মায়ানমারে এবং ২০১৫ সালে কোয়ালালামপুরে আসিয়ান শীর্ষ বৈঠকে অংশগ্রহণের মাধ্যমে তিনি আলোচনা ও মতবিনিময়ে মিলিত হন আসিয়ান নেতৃবৃন্দের সঙ্গে। আসিয়ান নেতারা তাঁর সঙ্গে আলোচনায় খুবই উৎসাহ প্রকাশ করেন ভারতের ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচি সম্পর্কে।

 

নভেম্বর, ২০১৫-তে প্যারিসে অনুষ্ঠিত হয় সিওপি-২১ শীর্ষ বৈঠক। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ঐ বৈঠকে যোগদানের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে আলোচনা ও মতবিনিময়ে মিলিত হন শীর্ষ বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে। জলবায়ুর প্রতি ন্যায় ও সুবিচারের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেন তিনি। একই সঙ্গে আহ্বান জানান এক দূষণমুক্ত সবুজ ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার। তিনি বিশেষ জোর দিয়ে বলেন, পরিবেশ ও উন্নয়ন সংক্রান্ত কাজকর্ম একই সঙ্গে চলতে পারে। তাই, এই লক্ষ্যে উদ্যোগী হতে তিনি আহ্বান জানান বিশ্ব নেতৃবৃন্দের কাছে, যাতে এই গ্রহকে সুরক্ষিত রাখা যায়। সিওপি-২১ শীর্ষ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং প্রেসিডেন্ট ওল্যাঁদ আন্তর্জাতিক সৌর সমঝোতার সূচনা করেন। এটি হল এমনই এক মঞ্চ, যেখানে পর্যাপ্ত সূর্যালোকের দেশগুলি পারস্পরিক সহযোগিতার মধ্য দিয়ে একত্রে মিলিত হওয়ার সুযোগ লাভ করে। পৃথিবীকে আরও সবুজ করে তোলার লক্ষ্যে এক আন্তরিক প্রয়াসেরই প্রতিফলন ঘটেছে সৌর সমঝোতা গড়ে তোলার মধ্যে। ২০১৬ সালের মার্চ মাসে প্রেসিডেন্ট ওবামা আয়োজিত পরমাণু নিরাপত্তা শীর্ষ বৈঠকে যোগ দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। সেখানে পরমাণু নিরপত্তা ও বিশ্ব শান্তি সম্পর্কে তাঁর মত ও চিন্তাভাবনার শরিক হয় অংশগ্রহণকারী অন্যান্য দেশগুলি।

বিশ্বের প্রত্যেকটি অঞ্চল সম্পর্কেই গভীরভাবে চিন্তাভাবনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদী। ২০১৫ সালের মার্চ মাসে সিসিলি, মরিশাস ও শ্রীলঙ্কা – এই ত্রিদেশীয় সফরে ভারত মহাসাগর সম্পর্কে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তিনি। সিসিলি দ্বীপপুঞ্জে প্রধানমন্ত্রী সূচনা করেন উপকূল রক্ষী এক র‍্যাডার প্রকল্পের। ভারতের সাহায্য ও সহযোগিতাতে রূপায়িত হয়েছে এই প্রকল্পটি। বারাকুডা-র সূচনা অনুষ্ঠানেও যোগ দেন শ্রী মোদী। ভারত-মরিশাস সহযোগিতার ক্ষেত্রে এটি হল এক বিশেষ স্মরণীয় ঘটনা।

এপ্রিল, ২০১৫-তে ফ্রান্স, জার্মানি ও কানাডা সফর করেন প্রধানমন্ত্রী। কনাডা ও ইউরোপের দেশগুলির সঙ্গে উন্নততর সহযোগিতার লক্ষ্যেই ছিল তাঁর এই বিদেশ সফর। জার্মানিতে প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং চ্যান্সেলর মার্কেল যৌথভাবে উদ্বোধন করেন হ্যানোভার মেস-এর। রেলের আধুনিকীকরণ প্রকল্প প্রত্যক্ষ করতে তিনি বার্লিন-এর রেল স্টেশনটিও দেখতে যান। ঐ দেশে দক্ষতা বিকাশের মতো বিষয়টির গুরুত্ব তুলে ধরাও ছিল তাঁর সফরসূচির অন্যতম উদ্দেশ্য। অন্যদিকে, কানাডা সফরকালে প্রধানমন্ত্রী জোর দেন অর্থনৈতিক সুসম্পর্ক, জ্বালানি সহায়তা এবং সাংস্কৃতিক সহযোগিতা বিনিময়ের ওপর। একদিক থেকে তাঁর এই কানাডা সফরের গুরুত্ব ছিল ঐতিহাসিক। কারণ, বিগত ৪২ বছরের মধ্যে এই প্রথমবার এক ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ঐ দেশ সফরে গেলেন।

এশিয়ায় ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে সম্পর্ককে আরও নিবিড় করে তুলতে নানাভাবে চেষ্টা চালিয়ে গেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। ২০১৪ সালের আগস্ট মাসে তিনি সফর করেন জাপান। তাঁর এই সফর ছিল বিশেষ তাৎপর্যময়। ঐ সময়ে শিল্প, প্রযুক্তি এবং স্মার্ট নগরী প্রকল্প সম্পর্কে সহযোগিতা প্রসারে সম্মত হয় দুটি দেশই। ২০১৫ সালের মে মাসে চিন সফরকালে তাঁকে বিশেষভাবে স্বাগত জানানো হয় জিয়ানে। এই প্রথমবার বিশ্বের এক নেতাকে স্বাগত সম্মান জানানো হল বেজিং-এর বাইরের একটি শহরে। শ্রী মোদী ছিলেন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী, যিনি মঙ্গোলিয়া সফর করেন। দক্ষিণ কোরিয়া সফরকালে তিনি ঐ দেশের প্রধান প্রধান সিইও-দের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হওয়া ছাড়াও সেখানকার একটি জাহাজ তৈরির কারখানা পরিদর্শন করতে যান এবং ভারতে বিনিয়োগের জন্য উৎসাহিত করেন ঐ দেশের বিনিয়োগ কর্তাদের।

২০১৫ সালের জুলাই মাসে উজবেকিস্তান, কাজাকস্থান, তুর্কমেনিস্তান, তাজিকিস্তান এবং কিরগিজস্তান – মধ্যপ্রাচ্যের এই পাঁচটি দেশ সফর করেন তিনি। তাঁর এই মধ্যপ্রাচ্য সফরের উদ্দেশ্য ছিল ঐ অঞ্চলের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ককে এক নতুন দিকে প্রবাহিত করা। জ্বালানি শক্তি থেকে সাংস্কৃতিক সম্পর্ক তথা নিবিড় অর্থনৈতিক সহযোগিতা - সবকটি বিষয়ই ছিল তাঁর এই সফর সূচির অন্তর্গত।

পশ্চিম এশিয়ার সঙ্গে ভারতের সুদীর্ঘ সম্পর্ককে বিশেষ স্বীকৃতি দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। এই সম্পর্ককে আরও জোরদার করে তুলতে নানাভাবে চেষ্টা চালিয়েছেন তিনি। এই লক্ষ্যে এ বছর মার্চ মাসে সৌদি আরব সফর করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখানে শীর্ষ স্থানীয় সৌদি নেতা ও বাণিজ্য প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হন তিনি। সৌদি আরবের সঙ্গে কূটনৈতিক তথা অর্থনৈতিক সম্পর্ক প্রসার ছিল তাঁর এই সফরের বিশেষ কেন্দ্রবিন্দুতে। বিশেষ ব্যক্তিত্বের অধিকারী হওয়া সত্ত্বেও শ্রী মোদী সেখানকার এল অ্যান্ড টি’র শ্রমিকদের শিবিরে যান তাঁদের সঙ্গে আলাপচারিতায় মিলিত হতে। সেখানে তিনি তাঁদের সঙ্গে মিলিত হন চা ও জলপানের আসরে। তাঁদের কঠোর শ্রম ও সংকল্পের ভুয়সী প্রশংসাও করেন তিনি। ২০১৫ সালে শ্রী মোদীর সংযুক্ত আরব আমীরশাহী সফর ছিল এক ঐতিহাসিক ঘটনা। কারণ, ঐ সময়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা প্রসারের সম্ভাবনা নিয়ে বিশেষ কথাবার্তা হয় ভারত এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর মধ্যে।

বিশ্বের শীর্ষ নেতাদের বিভিন্ন সময়ে স্বাগত জানিয়েছে ভারত। ২০১৫-র জানুয়ারি মাসে সাধারণতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত প্রধান অতিথি হিসাবে ভারত সফরে আসেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং এবং প্রেসিডেন্ট ওবামা যৌথভাবে ভাষণ দেন ভারতীয় ও মার্কিন বাণিজ্য নেতাদের সঙ্গে আয়োজিত এক বৈঠকে। তাঁদের সঙ্গে বিস্তারিত কথাবার্তাও বলেন তাঁরা। প্রধানমন্ত্রী টনি অ্যাবট ভারত সফরে আসেন ২০১৪-র সেপ্টেম্বর মাসে। ঐ মাসেই আবার ভারত সফর করেন প্রেসিডেন্ট জি জিনপিং। প্রধানমন্ত্রী মোদী তাঁকে স্বাগত জানান গুজরাটে। ঐ বছরের ডিসেম্বরে এক গুরুত্বপূর্ণ সফরে এদেশে আসেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন। পরমাণু সহযোগিতা এবং বাণিজ্যিক সম্পর্ক নিয়ে গভীর আলোচনা হয় দুটি দেশের মধ্যে।

প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ রাষ্ট্রগুলির সঙ্গেও নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন শ্রী মোদী। ২০১৪-র নভেম্বরে ফিজি সফরকালে তিনি সবকটি প্রশান্ত মহাসাগরীয় রাষ্ট্রের নেতাদের সঙ্গে মিলিত হন আলাপ-আলোচনার টেবিলে। ঐ অঞ্চলের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ককে আরও গভীরে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে আলোচনা ও মতবিনিময় করেন তিনি। ঐ বছরই দিল্লিতে এক শীর্ষ বৈঠক উপলক্ষে উপস্থিত ছিলেন আফ্রিকার দেশগুলির নেতারা। গত এক বছরের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী আরব নেতৃবৃন্দের সঙ্গেও আলোচনার বৈঠকে মিলিত হয়েছেন। আরব দুনিয়ার সঙ্গে ভারত কিভাবে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে পারে, সে সম্পর্কে মতবিনিময়ও ঘটেছে তাঁদের মধ্যে। আরব বিশ্ব বরাবরই ভারতের মিত্র স্থানীয়।

প্রধানমন্ত্রী মোদী যখনই বিদেশ সফর করেন, তাঁর সফর সূচি থাকে বিভিন্ন বৈঠক ও আলোচনায় ঠাসা। পরিকাঠামোর বিকাশ ও রূপান্তরের লক্ষ্যে আলোচনা এবং সেই সঙ্গে ভারতে লগ্নির জন্য আহ্বান ও আমন্ত্রণ জানানো তাঁর এই সফর সূচির বিশেষ উদ্দেশ্য। প্রধানমন্ত্রী যখনই কোনও দেশ সফরে গেছেন, শক্তি ও জ্বালানি, নির্মাণ ও উৎপাদন, পরিকাঠামো ও বিনিয়োগ এবং দক্ষতা বিকাশের মতো বিষয়গুলি ছিল তাঁর আলোচ্য সূচির অন্তর্ভূক্ত। তাঁর প্রত্যেকটি সফরই ছিল সফল ও তাৎপর্যময়, যা কোনও না কোনওভাবে এদেশের বিশেষ কাজে ও উপকারে এসেছে।