“জ-আ-ম দর্শন ভবিষ্যতে বহু উদ্যোগের বনেদ হিসেবে কাজে লাগবে। জ-আ-ম হচ্ছে একেবারে সর্বাধিক অর্জন সংক্রান্ত।
প্রতিটি টাকা খরচ থেকে সর্বোচ্চ উসুল।
আমাদের গরিবদের জন্য সবচেয়ে বেশি ক্ষমতায়ন।
জনগণের মধ্যে সর্বাধিক প্রযুক্তি সেঁধানো।“
-নরেন্দ্র মোদী
স্বাধীনতার ৬৭ বছর পরেও, ভারতে বহু মানুষের কাছে ব্যাঙ্কিং পরিষেবা অধরা। এর মানে, তাদের না আছে সঞ্চয়ের কোন উপায়, না প্রাতিষ্ঠানিক ঋণ মেলার সুযোগ। এই মৌল সমস্যাটির কিনারা করতে ২৮ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী মোদী সূচনা করেন প্রধানমন্ত্রী জন ধন যোজনা। মাত্র মাস কয়েকের মধ্যেই, এই প্রকল্প লক্ষ লক্ষ ভারতবাসীর জীবন ও ভবিষ্যৎ আমূল বদলে দিয়েছে। স্রেফ এক বছরের একটু বেশি সময়ে, ১৯ কোটি ৭২ লক্ষ মানুষ খুলেছে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট। এযাবৎ ইস্যু হয়েছে ১৬ কোটি ৮০ লক্ষ রুপে কার্ড। আমানতের অঙ্ক ২৮ হাজার ৬৯৯ কোটি ৬৫ লক্ষ টাকা। রেকর্ড সংখ্যক ১,২৫,৬৯৭ জন ব্যাঙ্ক মিশ্র (ব্যাঙ্ক প্রতিনিধি) নিযুক্ত হয়েছেন। এক সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি-১,৮০,৯৬,১৩০টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলে গিনিস বুক রেকর্ড গড়েছে এই জন ধন যোজনা।
লক্ষ লক্ষ ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলাটা এক চ্যালেঞ্জতো বটেই, আরও এক বড় চ্যালেঞ্জ ছিল তাদের অ্যাকাউন্ট কাজে লাগানোর জন্য আচরণগত পরিবর্তন আনতে মানুষকে প্রণোদিত বা রাজি করা। জিরো ব্যালান্স অ্যাকাউন্ট সেপ্টেম্বর ২০১৪-র ৭৬.৭৮% থেকে কমে ডিসেম্বর ২০১৫-য় দাঁড়িয়েছে ৩২.৪%। এযাবৎ ওভারড্রাফট বা জমার চেয়ে বেশি টাকা তোলার পরিমাণ ১৩১ কোটি টাকার বেশি।
এসব সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী মোদীর চাপ এবং জনগণ ও সরকারি ব্যবস্হাকে উদ্দীপিত করতে তাঁর আকর্ষনীয় ক্ষমতার দরুন। এই বিপুল কর্মকান্ডকে একটি ব্রত হিসেবে নেওয়া হয় এবং জনগণ ও সরকারের দৃষ্টান্তমূলক অংশীদারিত্বে তা সাফল্য লাভ করে।
দুর্নীতি রোধেও পালন করেছে এক মস্ত বড় ভূমিকা। আজকাল সরাসরি উপকার হস্তান্তরের (ডিবিটি) রূপে ভর্তুকি জমা পড়ে উপকৃতের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। কারচুপি, টাকা নয়ছয় বন্ধ। মর্জিমাফিক কাজ করার ফাঁকফোকর রুদ্ধ। বিশ্বের বৃহত্তম ডিবিটি কর্মসূচি হিসেবে সম্প্রতি গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস-এ ঠাঁই করে নিয়েছে পহল যোজনা। রান্নার গ্যাস বাবদ ভর্তুকি সরাসরি জমা পড়ছে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। এই কর্মসূচি ৩ কোটি ৩৪ লাখ ভুয়ো অ্যাকাউন্ট চিন্হিত করতে সাহায্য করেছে। বাঁচিয়েছে হাজার হাজার কোটি টাকা। সরকার ইদানীং ৩৫-৪০টি কর্মসূচিতে ডিবিটি কাজে লাগাচ্ছে। ২০১৫ সালে উপকৃতদের কাছে সরাসরি হস্তান্তর করা হয়েছে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা।
মানুষের কাছে মৌল ব্যাঙ্ক সুযোগ-সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার পর, সরকার নাগরিকদের জন্য বিমা ও পেনসনের বন্দোবস্ত করতে এক ঐতিহাসিক কাজে নেমে পড়ে। প্রধানমন্ত্রী সুরক্ষা বিমা যোজনা আছে দুর্ঘটনার জন্য ২ লক্ষ টাকা বিমা সংস্হান। এবাবদ বছরে প্রিমিয়াম দিতে হয় স্রেফ ১২ টাকা। আর বার্ষিক ৩৩০ টাকা প্রিমিয়াম দিলে প্রধানমন্ত্রী জীবনজ্যোতি বিমা যোজনায় মেনে জীবন বিমা। উপকৃতদের কাছ থেকে জমা পড়া টাকার হিসেবে অটল পেনসন যোজনায়। পেনসন দেওয়া হয় মাসে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। প্রধানমন্ত্রী সুরক্ষা বিমা প্রকল্পে নাম লিখিয়েছে ৯ কোটি ২০ লক্ষের বেশি মানুষ। প্রায় ৩ কোটি লোক যোগ দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী জীবন বিমা যোজনায়। অটল পেনশন যোজনায় নাম নথিভুক্ত হয়েছে ১৫ লাখ ৮৫ হাজারের মত।