একজন কঠোর পরিশ্রমী মানুষ হিসেবে ভাবমূর্তি রয়েছে শ্রী নরেন্দ্র মোদীর। তিনি যাঁদের কাজ করার নির্দেশ দেন, তাঁদের পরামর্শ দেন, শেষ ক্ষমতাটুকু পর্যন্ত কাজের জন্য ব্যয় করতে। উৎসাহিত করেন তার থেকেও আরও বেশি কিছু করে সাফল্য অর্জনের জন্য। যদি তাঁরা ঠিক সময়ে বা সঠিকভাবে কাজ করতে ব্যর্থ হন, তাহলে কি মোদী রেগে যান? তিনি কি এরকমই একজন কঠোর মানুষ?
এ ধরণের পরিস্থিতি মোদী কিভাবে সামলান তার একটি চমৎকার দৃষ্টান্ত রয়েছে। ঘটনার দিনক্ষণ হ’ল ৩১ আগস্ট, ২০১২। উপলক্ষ, দেশের এক রাজনৈতিক নেতার প্রথম গুগল হ্যাঙ্গআউট মঞ্চ ব্যবহারের ঘটনা। সেই ঘটনায় বিশ্ব জুড়ে এতই সাড়া পড়ে গিয়েছিল যে, গুগল সার্ভারগুলি ক্র্যাশ করে যায় ঠিক সম্প্রচারের সময়টিতেই। ফলে, ইউটিউব মারফৎ তা প্রচার করতে সময় লেগে যায় আরও ৪৫ মিনিটের মতো। সম্প্রচার শেষে গুগলের আন্তর্জাতিক টিমটিকে মোদীর অফিসে আমন্ত্রণ জানানো হয় সৌজন্যমূলক আলাপচারিতার জন্য। ভয় ছিল, তিনি বোধ হয় রেগে বকাবকি শুরু করে দেবেন। কারণ, কাজকর্ম নিখুঁত হওয়ার ব্যাপারে তাঁর বিশেষ সুখ্যাতি ছিল। তাছাড়া, এই ধরণের পরিস্থিতিতে ভারতের রাজনীতি জগতের ব্যক্তিদের আচার-আচরণ সম্পর্কে একটি ধারণা তৈরি হয়ে গিয়েছিল সকলের মধ্যে। কিন্তু গুগল-এর টিম মোদীর কাছে পৌঁছতেই তাঁর স্মিত হাসিমুখ দেখে বিস্মিত হলেন সকলেই। গুগল-এর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এবং প্রযুক্তিগত উন্নয়নের কথাবার্তা নিয়েই টিমের সদস্যদের সঙ্গে আলাপচারিতায় মেতে উঠলেন শ্রী মোদী। ভবিষ্যতে সার্ভার ক্র্যাশ করার মতো ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না হয়, সেই লক্ষ্যে কোন্ কোন্ ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে, সে সম্পর্কেও খোঁজ নিলেন তিনি।
মনে রাখতে হবে, এটি কিন্তু কোনও কল্পকাহিনী নয়। মোদীর প্রকৃতি হল এরকমই। চরম সংকটজনক পরিস্থিতিতেও কখনোই ধৈর্যচ্যূত হয়ে মেজাজ হারান না তিনি। যাঁরাই তাঁর সঙ্গে কথাবার্তায় মিলিত হয়েছেন, তাঁরাই সমর্থন করেন একথা। ব্যক্তিগতভাবে কারোর প্রতিই তিনি নির্দয় নন। যদি কোনও ব্যক্তি বা দল কাজ করতে ব্যর্থ হয়, তিনি তাঁদের পরামর্শ দেন, অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা লাভ করে পরিকল্পনা মতো পরের বার কাজে নেমে পড়ার। শেখার আগ্রহ ও মানসিকতা যতদিন পর্যন্ত কাজ করবে আপনার মধ্যে মনে রাখবেন, মোদী আছেন আপনার পাশেই, আপনার সঙ্গেই।