Research and innovation vital for us: PM Modi
In 21st century, it is necessary to educate & skill our youth. They can take the country to greater heights: PM
NDA Government would never take steps that troubles innocent and honest people: PM Modi
Our Government would not spare those who are guilty: Prime Minister

প্রিয় ভাই ও বোনেরা,

আমি সবার আগে সেই সপ্তঋষিকেপ্রণাম জানাই। শিক্ষক তো অনেকেই হন ; ভাল শিক্ষক, উত্তম শিক্ষক, সমর্পিত শিক্ষক। কিন্তু ইতিহাসে ‘ অমর শিক্ষক ’ শব্দবন্ধটি প্রয়োগ করতে হলে এই সপ্তঋষির কথাই সর্বাগ্রে ভাবতে হবে, যাঁরা একশো বছরপর বর্তমান প্রজন্মকেও পড়াচ্ছেন, শিক্ষিত করে যাচ্ছেন। সম্ভবত ইতিহাসে এই কেএলইসোসাইটির শিক্ষা পদ্ধতি বিরলতম বলে স্বীকৃতি পাবে।

আমি দেখতে পাচ্ছি আমারসামনের নবীন প্রজন্মের লক্ষাধিক মানুষ বসে আছেন। ওই সপ্তঋষির শিক্ষাপদ্ধতিরঅধুনাতম ফসল এরা। এই ঋষি রা শ্রদ্ধেয় লোকমান্য তিলক থেকেপ্রেরণা নিয়েছেন। সন্ত বাসবেশ্বরজি সামাজিক বিপ্লবের যে তূর্য বাজিয়েছিলেন সেই বিপ্লবকেশিক্ষার মাধ্যমে শুধুই প্রত্যেক মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া নয়, এই মাটিতে প্রজন্মেরপর প্রজন্মকাল ধরে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্হাও তাঁরা করে গেছেন আজ থেকে ১০০ বছর আগে।শিক্ষানুরাগী প্রত্যেক মানুষের কাছে এটা গর্বের বিষয়।

কতসংস্হার জন্ম হয়, টালমাটাল হয়, বন্ধও হয়ে যায়, কিন্তু কল্পনা করুন ওই সাত ঋষিবরকেমন সংস্হার ভিত্তিস্হাপন করেছিলেন, যা ১০০ বছর পরও ফলে ফুলে বিকশিত হয়ে রয়েছে।

আজবিশ্বের প্রত্যেক প্রান্তে কেএলইর ছাত্রছাত্রীদের পাওয়া যায়। আজও চাকরিরইন্টারভিউর সময় বিভিন্ন শংসাপত্র, কত শতাংশ নাম্বার পেয়ে পাশ করেছে সেগুলি যেমনবিবেচ্য, পাশাপাশি ইন্টারভিউ বোর্ডের সদস্যরা যদি জানতে পারেন যে ছাত্রটি কেএলইরছাত্র তাহলে তাদের চোখ চকচক করে ওঠে, অজান্তেই তাঁরা ওই চাকরিপ্রার্থীকেঅগ্রাধিকার দিয়ে দেন।

ওইসপ্তর্ষির অনুগামীরা বিগত ১০০ বছর ধরে কত না সাধনা করেছেন, তবেই এমন প্রাণবন্তব্যবস্হা গড়ে তুলতে পেরেছেন।

আজযখন দেশে শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে অনেকে ভাবেন শিক্ষাকেব্যবসার সঙ্গে জুড়ে দিলে বেশ লাভ হবে। এদের সকলের উচিত সপ্তঋষির শিক্ষা গ্রহণকরা। ১০০ বছর আগে তাঁদের বেতন বা কত ছিল ? ৩০ টাকা, ৩৫ টাকা, ৫০ টাকা ! ১০০ বছর আগেযাঁদের বেতন ৩০-৫০ টাকা ছিল সেই শিক্ষকেরা সমাজের জন্য এত বড় অবদান রেখেছেন।

ভাইবোনেরা, ১০০ বছর আগে রাজনৈতিক দলগুলিও স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারতো না। কতটা নিঁখুতফলে শুধুমাত্র গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্হাপনা গড়েতুলতে পেরেছিলেন তাঁরা সাধারণ মানুষের অর্থানুকূল্যের আর প্রাক্তন ছাত্রদের সাহায্যেতাঁরা এই প্রতিষ্ঠানকে সফলভাবে পরিচালনা করেছেন যা গোটা দেশের সামনেদৃষ্টান্তস্বরুপ।

আমিবিশেষ করে আমার দিল্লির উচ্চশিক্ষিত বন্ধুদের আর সংবাদমাধ্যমে বন্ধুদের অনুরোধকরছি, যে কোনও সফল মানুষের বয়স ৬০ বছর হলে তাঁর সম্পর্কে খবরের কাগজে ভাল ভাল কথালিখে প্রবন্ধ ছাপা হয়, কোনও সরকার গঠনের পর ১০০ দিনের সাফল্য নিয়ে প্রবন্ধ লেখাহয়, কারো বয়স ৭৫ বছর হলে তাঁর জয়জয়কার হয়। আমার অনুরোধ আপনারা তেমনি সারা ভারতেরসকল সংবাদমাধ্যমে এই সপ্তঋষির কাজের শতবর্ষের সাফল্য নিয়ে লিখুন, যাতে গোটা দেশতাদের সম্পর্কে জানতে পারে, তাদের থেকে প্রেরণা নিয়ে দেশে অনুরূপ শিক্ষা প্রসারেরআন্দোলন গড়ে তুলুন।

 

ভাইও বোনেরা, মহাত্মা গান্ধী স্বাধীনতা সংগ্রামী গড়ে তুলতে গুজরাট বিদ্যাপীঠ নামকএকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছিলেন, লোকমান্য তিলকও স্বাধীনতা সংগ্রামী গড়েতুলতে দেশের মানুষকে স্বাবলম্বী করে তুলতে শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়েছিলেন। একবিংশশতাব্দীর ভারতকে বিশ্ববাসীর সামনে নিজের প্রতিষ্ঠা জোরদার করতে হলে আমাদের নতুনপ্রজন্মকে বিশ্বমানের শিক্ষায় শিক্ষিত ও দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে।

ভাইও বোনেরা, কয়েক বছর আগেও বিশ্ববাসীর কাছে ভারতের পরিচয় ছিল সাপ-সাপুড়ে,জাদু-টোনার দেশ হিসেবে। কিন্তু বিগত কয়েক বছর ধরে ভারতের নবীন প্রজন্মের যুবকযুবতীরা কম্পিউটারের কী বোর্ডে আঙুলের জাদু দিয়ে বিশ্ববাসীকে চমকে দিয়েছেন, দেশেরপরিচয় বদলে দিয়েছেন। ভারত সম্পর্কে বিশ্ববাসীর চিন্তাপ্রক্রিয়াই বদলে দিতেপেরেছেন। তেমনি বিগত ১০০ বছর ধরে গোটা কর্ণাটকের জনজীবনকে সামর্থ্য অর্জনে আর গোটাদেশকে শক্তি জোগাতে এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের অভাবনীয় অবদান রয়েছে।

গতবারযখন এখানে এসেছিলাম, আমাদের প্রভাকরজি বলেছিলেন, ৩২ বছর ধরে আমার উপর এই দায়িত্বন্যস্ত রয়েছে। এটা কম কথা নয় প্রভাকরজি, আমি আপনাকে অভিবাদন জানাই, আপনার গোটা দলকেঅভিবাদন জানাই। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে এত নমস্য শিক্ষক ও সংগঠকমনীষীরা কাজ করে গেছেন, সংস্হা, শিক্ষা ও শিক্ষার্থীর হিতে কোনওরকম সমঝোতা না করেনিরন্তর কাজ করে যাওয়া সহজ কাজ নয়। আজ আপনাদের সাফল্য দেখে আপনাদের কাছে কিছুচাইবো। চাইতে পারি কী ?

আপনারাহয়তো ভাবছেন, এ কেমন প্রধানমন্ত্রী, জনগণের সামনে ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে এসেছেন! আসলেএই প্রধানমন্ত্রীর চরিত্রই এটা, ভিক্ষার মাধ্যমেই জীবন গড়ে তুলেছি। আজ তাইসপ্তঋষির সাধনার উপর আস্হা রেখে, এই ব্যবস্হাকে ভরসা করে, আমার সামনে বসে থাকানবীন প্রজন্মের লক্ষাধিক মানুষকে ভরসা করে কিছু চাইবো। চাইবো কী ? আপনাদের কাছ থেকে জবাব চাইছি, উচ্চকন্ঠে জবাব দিন।চাইবো কি চাইবো না ?

আপনারাইবলুন, কোন প্রতিষ্ঠানের এক লক্ষ পঁচিশ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে ? দেশে এতগুলি শাখা রয়েছে ? আমাদের কেএলই কি সংকল্প গ্রহণ করতে পারে যে আগামী ২০২০ সালে অনুষ্ঠিতব্যটোকিও অলিম্পিকে এই প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীদের মধ্য থেকে কয়েকটি স্বর্ণপদক আসবে ? এটা সম্ভব বন্ধুরা, আপনারা মন থেকে চাইলে, সংকল্পজোরদার হলে অবশ্যই সম্ভব।

আমারপ্রিয় নবীন বন্ধুরা, উদ্ভাবনই বিকাশ উন্নয়নের মূল চাবিকাঠি। উদ্ভাবন না থাকলে জীবনথমকে দাঁড়ায়। আবিষ্কারের মাধ্যমেই নির্দিষ্ট ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা অন্যদের থেকেএগিয়ে যেতে পারে। অন্যরা কেবলই তাদের উ ৎ পাদিত পণ্যের খরিদ্দার হতে বাধ্য হয়। গতবার এখানে এসে দেখেছি সম্ভাবনাময় মেধাবীবিজ্ঞানীরা রয়েছেন, এত ভাল প্রতিষ্ঠান, আধুনিক যন্ত্রপাতি এবং প্রযুক্তিগত জ্ঞানেরমিলনেই তো নতুন নতুন উদ্ভাবনের আবহ গড়ে ওঠে। আমি চাই এই উদ্ভাবনের মাধ্যমেপ্রতিবছর কেএলই মানবজাতিকে আন্তর্জাতিক মানের উদ্ভাবক উপহার দিক। আপনারা আমারঅনুরোধ রাখবেন ? রাখবেন কি ?

তৃতীয়ত,আজ বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ১০০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে আমাদের দেশের কোনওবিশ্ববিদ্যালয়ের নাম নেই। লজ্জা হয়। ভারত সরকার এবছরের বাজেটে গুরুত্বপূর্ণসিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমি বলেছি, ১০টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ১০টি বেসকারিবিশ্ববিদ্যালয়কে সংকল্প নিতে হবে, বিশ্বের ১০০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে আমাদেরবিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে উঠে আসতে হবে। যারা এই সংকল্প নিয়ে এগিয়ে আসবে ভারত সরকারতাদের বিশেষ আর্থিক সাহায্য দেবে। তাদের যাতে লাল ফিতের ফাঁসে না আটকে পড়তে হয়সেই ব্যবস্হা করা হয়েছে। অনুমতির নিয়মকে সহজ করা হবে। আপনারা এগিয়ে আসুন, সরকারসবরকম সাহায্য করতে প্রস্তুত।

ভাইও বোনেরা, আজ কর্ণাটকে এসেছি, টিভির মাধ্যমে দেশের জনগণ আমরা ভাষণ শুনতে পাচ্ছেন।আমি আরেকটি বিষয় নিয়ে বলতে চাই, বলবো ? আপনারা শুনবেন ? আমরা সরকারে আসার আগে২০১১-১৪ সালে সংবাদপত্রগুলিতে শুধু দুর্নীতির খবর ছাপা হতো। টুজি স্কিমে এত লক্ষকোটি ঘুষ খাওয়া হয়েছে, কয়লা খনি বন্টনে এত লক্ষ কোটি খাওয়া হয়েছে। আর গত ৮ নভেম্বররাতে আমার জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণের পর দেশের পরিস্হিতি আজ কোথায় ? মাত্র চার হাজার টাকার জন্য মানুষকে ঘন্টার পর ঘন্টাব্যাঙ্ক ও এটিএমের সামনে লাইনে দাঁড়াতে হয়েছে।

আমারপ্রিয় দেশবাসী, স ৎ ও পরিশ্রম করে রোজগার কথা দেশবাসীকে এভাবে কষ্ট দেওয়ার বিন্দুমাত্র ইচ্ছেআমার ছিল না। এরকম সিদ্ধান্ত নিতে আমাদের বাধ্য করেছেন মাত্র কয়েক লক্ষ আইনলঙ্ঘনকারী। বেহিসেবি রোজগারের টাকাই আমরা উদ্ধার করতে চেয়েছি। কংগ্রেস দলেরবন্ধুরা ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাতিল করা নিয়ে আমাদের সমালোচনা করায় আমি অবাক হয়েছি।হ্যাঁ, আপনারা যখন ২৫ পয়সার মুদ্রা বাতিল করেছিলেন, একমাত্র আমিই প্রতিবাদজানিয়েছিলাম। কিন্তু আপনারা সাহস করে কালোটাকা উদ্ধারের স্বার্থে ৫০০ টাকা ও ১০০০টাকা বাতিল করলে আমি আপনাদের অবশ্যই সমর্থন করতাম। কিন্তু সেটা করার মতো সাহস ওশক্তি আপনারা জোটাতে পারেন নি। এখন আপনারা আমার সমালোচনা করছেন।

 

ভাই ও বোনেরা, যারা আমারভাষণ শুনছেন, আমার কথা শুনছেন, আমি আগেও বলেছি, ৫ বছর আগেই আমি জনসভায় বলেছিলাম,কংগ্রেস সরকার ২৫ পয়সার মুদ্রা বাতিল করছে, এটা অন্যায়। আমার ক্ষমতা থাকলে ১০০০টাকার নোট বাতিল করে দেব। আজও অনেক সংবাদমাধ্যমের কাছে সেই ভাষণের ভিডিও ক্লিপিংসপাওয়া যাবে।

ভাই ও বোনেরা, আমি দেশকেকোনও কিছু লুকাই নি। আমি প্রথম দিনই ঘোষণা করেছি, আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা, আমিযদি মিথ্যে কথা বলি তাহলে আপনাদের আমার উপর রাগ করার সম্পূর্ণ অধিকার রয়েছে। আমিপ্রথম দিনই বলেছি, আমাকে ৫০ দিন সময় দিন, ৩০-শে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় দিন, আমিসবকিছু ঠিক করে দেবো। সেদিনই বলেছি, ৩০-শে ডিসেম্বর পর্যন্ত সামান্য কষ্ট হবে,বলেছিলাম কি না। দেশের কোটি কোটি মানুষ সৎ ও পরিশ্রমী, তাঁরা সততা নিয়ে বাঁচেন, সৎবলেই সহ্য করেন। আপনারা আমাকে বলুন, সততা রক্ষা করার দায়িত্ব সরকারের কি না ? সততাকে রক্ষা করতে হবে কি না ? সেজন্যেই বলছি,বেইমানদের সাজা দেওয়ার জন্য ৫০ দিন সামান্য কষ্ট হলেও আপনারা নিশ্চয়ই সরকারেরসঙ্গে সহযোগিতা করবেন। করবেন কি ? দুহাত উপরে তুলে জবাব দিন ভাই ও বোনেরা, করতালির আওয়াজে জবাব দিন, গোটা দেশআপনাদের দেখছে, সকল নবীন প্রজন্মের মানুষ, সকল ভারতবাসী দেখছেন। সবাই এই দৃশ্যদেখতে ও শুনতে পাচ্ছেন। এয়ারকন্ডিশন কামরায় বসে যারা বেইমানদের সমর্থনে বক্তব্যরাখছেন, তাঁরাও দেখে নিন, আপামর সাধারণ মানুষ কী চান।

ভাই ও বোনেরা, আমাদের দেশেরপ্রত্যেক নির্বাচনের আগে যে ভোটার তালিকা তৈরি হয়, সেটা কোনও গোপন কাজ নয়। কিন্তুআমার নোট বাতিল করার আগে প্রস্তুতিপর্বকে গোপন রাখার বাধ্যতামূলক ছিল। এই খবরকোনভাবে ফাঁস হয়ে গেলে বেইমানরা এত ক্ষমতাবান যে কোনওভাবে তাঁরা নিজেদের লুকনোটাকা বাঁচানোর ব্যবস্হা করে নিত। এখন পারেনি, তাই দেশবাসী খুশি। ৮ তারিখ রাতেভারতের গরিব মানুষ যখন শান্তিতে ঘুমিয়েছেন, বড়লোকদের তখন ঘুমের ওষুধ কিনতে বাজারেযেতে হয়েছিল।

ভাই ও বোনেরা, ভোটার তালিকাতৈরি কোনও গোপন কাজ নয়। এই তালিকা প্রস্তুত করার কাজ সরকারি প্রশাসন, স্কুলেরশিক্ষক শিক্ষিকা থেকে শুরু করে আশাকর্মীরা পর্যন্ত সকলেই করেন, সঙ্গে থাকেন সকলরাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা। তারপরও ভোটের দিন অনেক অভিযোগ শোনা যায়। অমুকের নামওঠেনি, তমুকের নাম ছাপা হয়নি, তমুকের স্ত্রীর নাম ওঠেনি, তমুকের সাধারণ নির্বাচনেরসময় সোসাইটির নামের জায়গা ফাঁকা রয়েছে। প্রায় তিনমাস ধরে নির্বাচনের প্রক্রিয়াচলে। এই ৯০ দিন অন্য সকল কাজকর্ম থমকে থাকে। সকল দপ্তরের প্রত্যেক আধিকারিক এইকাজে লিপ্ত থাকেন। প্রত্যেক বিভাগের প্রশাসন, রাজনৈতিক দলগুলি এবং সংবাদমাধ্যম এতপ্রচার করা সত্ত্বেও গড়ে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ ভোটদান হয়, তার জন্যে ৯০ দিন লাগে।আমার প্রিয় দেশবাসী, আমি আপনাদের কাছে কেবলমাত্র ৫০ দিন সময় চেয়েছি। দেশেরস্বার্থে চেয়েছি।

ভাই ও বোনেরা, আপনারা হয়তোলক্ষ্য করেছেন যে এবারের বাজেটে আমরা Cashless Society গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছি। যারা আমার মনের কথা শীর্ষক ভাষণ রেডিওতে শোনেন আরটিভিতে দেখেন, তারা জানেন আমি দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এই উপায়টিকে অস্ত্রহিসেবে ব্যবহার করতে চেয়েছি। এই প্রকল্প সফল হলে ধীরে ধীরে সমাজ ও বাজারে নোটেরলেনদেন কমে যাবে। ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড আর প্লাস্টিক কারেন্সি নির্ভরতাবাড়বে। সেজন্যে আমরা বাজেটে ক্রেডিট কার্ড আর ডেবিট কার্ডকে করমুক্ত করে দিয়েছি।সরকারি বিভাগগুলিকেও বলেছি যথাযথ ব্যবস্হা নিতে। অনেক বিভাগই এই কর হ্রাস করেছে আরঅনেক বিভাগের ঘোষণার প্রস্তুতি হিসেবেই এই পদক্ষেপগুলি নেয়া হয়েছিল। আমি যখনপ্রধানমন্ত্রী জন-ধন-যোজনায় দরিদ্রদের অ্যাকাউন্ট খোলার আহ্বান জানিয়েছিলাম,অ্যাকাউন্ট খোলার পর তাদেরকে ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ডও দিয়েছি। ২০ কোটি মানুষকেদিয়েছি, যাতে তাঁরা ধীরে ধীরে এগুলি ব্যবহারের অভ্যাস গড়ে তোলেন। দু ’ বছর আগে দিয়েছি, হঠা ৎ করে কিছুই করিনিবন্ধুগন, এই রোগ সমাজের অনেক গভীরে ক্ষত সৃষ্টি করে রেখেছে। ৭০ বছর ধরে রোগ বাড়তেবাড়তে অনেকেই এখন এই রোগের শিকার।

ভাই ও বোনেরা, সেজন্য আমরাওক্রমশঃ ঔষধের মাত্রা বাড়াচ্ছি। প্রথমে এক ডোজ, তারপর দ্বিতীয় ডোজ, আর এখন তৃতীয়এবং সবচাইতে বড় ডোজ দিলাম ৮ নভেম্বরে। দেশের সকল বেইমান এবং তাদের রক্ষাকর্তারা কানখাড়া করে শুনুন, ৩০শে ডিসেম্বরের পর মোদী আর কোনমতেই আপনাদের রেহাই দেবে না। যারাআগে গঙ্গায় চার আনা পয়সাও ফেলতেন না তারা এখন লুকিয়ে ৫০০ এবং ১০০০ টাকার নোটগঙ্গার জলে ভাসিয়ে দিয়েছেন। একদিন দেখলাম এক নোংরা পরিস্কারকারীনী বলছেন যে তিনিডাস্টবিনে ৫৭,০০০ টাকা কুড়িয়ে পেয়েছেন। সেই টাকা পেয়ে ভদ্রমহিলা থানায় জমা করতেযান। আজ, আমি এখানে এলে আমাকে স্বাগত জানাতে আমাদের প্রভাকরজী জনগণের দিকে ছুঁড়েছুঁড়ে ফুলের পাপড়ি ফেলছিলেন। এখন সেদিন দূরে নেই যখন নেতাদের মানুষ ৫০০ আর হাজারটাকার নোট দিয়ে স্বাগত জানাবেন।

ভাই ও বোনেরা, দুর্নীতিরবিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমি আপনাদের সহযোগিতা চাইছি। আপনাদের কষ্ট আমি অনুভব করছি। গতকালদেখছিলাম ব্যাঙ্ক কর্মচারিরা বিগত এক বছরে যত কাজ করেননি, গত দিনের চাপে তারা এরথেকে বেশি কাজ করেছেন। আপনারা সবাই সেই হাসিমুখে অক্লান্ত পরিশ্রমীব্যাঙ্ককর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে হাততালি দিন। আজকাল যেসব ব্যাঙ্ক কর্মচারিরাঅসামান্য কাজ করে যাচ্ছেন অবিরাম তাদের অভিনন্দন জানান।

আমি দেখেছি, অনেক ৭০-৭৫ বছরবয়সী প্রাক্তন ব্যাঙ্ককর্মীও এই সময়ে ব্যাঙ্ক গিয়ে তাদের সহকর্মীদের সাহায্য করছেনবিনামূল্যে। অনেক নবীন বন্ধু তাদের জন্য বাড়ি থেকে চেয়ার এনে দিয়েছেন। দেশ ওজাতির উদ্দেশ্যে উৎসর্গীকৃত তাদের এই শ্রমকে আমি সেলাম জানাই। দেশের নবীনপ্রজন্মের মানুষ আপনাদের দেখে নিশ্চয়ই শিখছেন কেমন করে দেশের প্রয়োজনে ঝাঁপিয়েপড়তে হয় কোনওরকম প্রাপ্তির আশা না করেই। তেমনি আমরা দেখেছি অনেক মা ও বোনব্যাঙ্কের লাইনে ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকা মানুষদের জল খাইয়েছেন। ভাই ওবোনেরা, সিনেমাহলের টিকিট কাটার লাইনে ঝগড়া মারামারি হয়। কিন্তু এত বড় দেশেরঅধিকাংশ নাগরিক ব্যাঙ্কের সামনে নীরবে শান্তিপূর্ণভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার কষ্টসহ্য করছেন। দেশ বেইমানদের হাত থেকে মুক্তি চায়।

ভাই ও বোনেরা, আপনাদের যন্ত্রনাকে সেলাম জানাই। এই যন্ত্রনার চেয়েও দেশের লাভ অনেক বেশি। আপনাদের আশ্বস্ত করছি, আমি আপনাদের পাশে আছি এবং থাকবো। আমি দেশেরসৎ নাগরিকদের কাছে আবেদন রাখছি, কোনও তাড়াহুড়ো করবেন না। ৫০ দিন সময় হাতে রয়েছে।কোনও বেইমানকে চারটি একশো টাকার নোটের বদলে বাতিল ৫০০ টাকার নোট দেবেন না। আপনারপাঁচশো টাকার মূল্য চারশো নিরানব্বই টাকা একশো পয়সা।এই পুরো ৫০০ টাকার উপর আপনারই অধিকার রয়েছে। স ৎপথে অর্জিত ১০০টাকার নোটের উপর আপনারই অধিকার রয়েছে। ৩০ ডিসেম্বরের আগে আপনি অবশ্যই সমমূল্যেরনোট ব্যাঙ্ক থেকে ফেরত পাবেন। বেইমানদের অনেকে হয়তো গঙ্গায় নোট ভাসিয়ে বেঁচেযাবেন, তাদের ২০০ থেকে ৪০০ কোটি টাকা লোকসান হবে। কিন্তু ব্যাঙ্কে জমা করে সততাদেখাতে গেলেই দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে সমস্ত হিসেব করে যাদের ২০০ শতাংশ দন্ডদিতে হয় দেবো। এতোদিন অনেক লুটেছেন এরা।

আমার প্রিয় দেশবাসী, লুটেরাদেরআপনারা দেখে নিয়েছেন। ৭০ বছর ধরে লুট চলেছে, আমাকে ৭০ মাস দিন, আমি দেশকেদুর্নীতিমুক্ত করে ছাড়বো। আমার কর্ণাটকের ভাই ও বোনেরা, এখানে অধিকাংশ মানুষইগ্রামের বাসিন্দা। আপনারা আমাকে এই পবিত্র কর্মযজ্ঞে আশীর্বাদ করুন। আমার সততা,আমার কাজকে ভরসা করলে উঠে দাঁড়িয়ে হাততালি দিয়ে এয়ারকন্ডিশনড কামরায় বসেদুর্নীতিবাজদের হয়ে সওয়াল করতে থাকা আমার জ্ঞানী সমালোচকদের যোগ্য জবাব দিন।আপনারা দেখুন, সততার খাতিরে কষ্ট সহ্য করা এই দরিদ্র জনসাধারণ আমাকে আশীর্বাদজানাচ্ছেন। দেশ অবশ্যই দুর্নীতিমুক্ত হবে। আমি আপনাদের কাজে কৃতজ্ঞ। সাধারণতঃসাংবাদিকরা চেয়ার ছেড়ে ওঠেন না। আজ দেখছি তারাও উঠে দাঁড়িয়ে করতালি বাজাচ্ছেন।আপনাদের সেলাম। অনেক অনেক ধন্যবাদ।