#MannKiBaat: PM Modi extends Diwali greetings to people across the country
#MannKiBaat: Diwali gives us the message to move from darkness to light, says PM Modi
#MannKiBaat: Diwali has now become a global festival. It is being celebrated across several countries, says PM
#MannKiBaat: PM Narendra Modi lauds courage of our jawans #Sandesh2Soldiers
#MannKiBaat –Our jawans display courage not only at borders but whenever there are natural calamities or even law and order crisis: PM
Aspirations of the poor must be kept in mind while formulating policies: PM Modi during #MannKiBaat
Discrimination between sons and daughters must be ended in society: PM Modi during #MannKiBaat
#MannKiBaat: PM Modi recalls contribution of Sardar Patel towards unity of the country, pays tribute to former PM Indira Gandhi
SardarPatel gave us ‘Ek Bharat’, let us make it ‘Shreshtha Bharat’, says Prime Minister Modi during #MannKiBaat
PM Modi pays tribute to Guru Nanak Dev during #MannKiBaat

আমার প্রিয় দেশবাসী, 

আপনাদের সবাইকে দীপাবলীর অনেক অনেকশুভকামনা। ভারতের প্রতিটি কোণে কোণে উৎসাহ ও উদ্দীপনার সঙ্গে দীপাবলীর উৎসব পালনকরা হয়। ভারত এমনই এক দেশ, যেখানে ৩৬৫ দিন ধরে দেশের কোনও না কোনও অংশে কোনও নাকোনও উৎসব চোখে পড়ে। দূর থেকে যাঁরা দেখছেন আমাদের দেশকে, তাঁদের কখনও কখনও এমনওমনে হতে পারে যে ভারতীয় জনজীবন যেন উৎসবেরই দ্বিতীয় এক নাম, আর এটা খুবইস্বাভাবিক। বেদের সময় থেকে আজ পর্যন্ত ভারতে উৎসবের যে পরম্পরা রয়েছে, তা সময়েরসঙ্গে পরিবর্তনশীল উৎসব। চিরাচরিত বেশ কিছু উৎসবের সমাপ্তি ঘটিয়ে সময় ও সমাজেরচাহিদা অনুসারে উৎসবে নানা পরিবর্তনকে আমরা সহজভাবে মেনে নিয়েছি। কিন্তু এই সবকিছুমধ্যে আমরা একটা বিষয় ভালোভাবে দেখতে সক্ষম যে ভারতে এই যে সারাবছর ধরে উৎসবেরপুরো যাত্রাপথ, তার ব্যপ্তি, তার গভীরতা, প্রতিটি ব্যক্তির ওপর তার প্রভাব – এইসবকিছু একটিই মূল মন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত – ব্যক্তিকে সমষ্টির দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।ব্যক্তি ও ব্যক্তিত্বের প্রসার ঘটিয়ে, নিজেদের সীমিত চিন্তা-ভাবনার গণ্ডি পেরিয়েসমাজ থেকে মহাবিশ্ব পর্যন্ত বিস্তৃত করার এক প্রয়াস চলতেই থাকে। এবং তা এই উৎসবেরমাধ্যমেই করা সম্ভব। কখনও কখনও ভারতবর্ষে উৎসব মানে খাওয়া-দাওয়ার মহোৎসব মনে হয়।কিন্তু তার মধ্যেও চিন্তা-ভাবনা থাকে – কোন্‌ ঋতুর উৎসব এবং সেখানে কী খাওয়া উচিত।কৃষকদের কোন্‌ ধরণের ফসল হচ্ছে এবং সেই ফসলকে উৎসবের সঙ্গে কীভাবে যুক্ত করা যায়,রোগমুক্তির ক্ষেত্রে কী ধরণের সংস্কার মানা উচিত ইত্যাদি সমস্ত চিন্তা-ভাবনা আমাদেরপূর্বসূরীরা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে উৎসবের সঙ্গে মিলিয়ে দিয়েছেন। আজ সারা দুনিয়াপরিবেশ নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করছে। প্রকৃতি ধ্বংস হয়ে যাওয়া এক চিন্তার বিষয় হয়েউঠেছে। সেখানে ভারতবর্ষে উৎসবের এই পরম্পরা প্রকৃতি-প্রেমকে আরও শক্তিশালী করেতোলে। বালক থেকে শুরু করে প্রতিটি মানুষকে আরও শুভচিন্তাসম্পন্ন করে তোলে। বৃক্ষবা গুল্ম, নদী, পশু-পাখি, পর্বত – যাই হোক না কেন, প্রত্যেকের প্রতি দায়িত্ববোধজাগিয়ে তোলে উৎসব। আজকাল তো আমরা রোববার-কে ছুটির দিন হিসাবে পালন করি। কিন্তুযাঁরা পুরনো দিনের মানুষ, যাঁরা শ্রমিক, মৎস্যজীবী, আপনারা দেখে থাকবেন, শত শত বছরধরে আমাদের পরম্পরা ছিল পূর্ণিমা ও অমাবস্যায় ছুটি পালন করা। আর বিজ্ঞান এটাপ্রমাণ করে দিয়েছে যে পূর্ণিমা ও অমাবস্যায় সমুদ্রের জলে কী ধরণের পরিবর্তন আসে,প্রকৃতির ওপর কোন্‌ কোন্‌ জিনিসের প্রভাব পড়ে এবং মানুষের মনের ওপরেও তার প্রভাব পড়ে।অর্থাৎ এখন পর্যন্ত আমাদের এখানে ছুটিও মহাবিশ্বের সঙ্গে বিজ্ঞানকে যুক্ত করে পালনকরার এক পরম্পরা রয়ে গেছে। আজ যখন আমরা দীপাবলী উৎসব পালন করছি, যেমন আমি বললাম,আমাদের প্রতিটি উৎসব শিক্ষামূলক হয়, শিক্ষার বোধ নিয়ে আসে। দীপাবলীর এই উৎসব ‘তমসোমা জ্যোতির্গময়’ – অন্ধকার থেকে আলোয় যাওয়ার বার্তা দেয়। আর অন্ধকার – আলোর অভাবেযে অন্ধকার এটা সেই অন্ধকার নয়, অন্ধ শ্রদ্ধারও অন্ধকার, অশিক্ষারও অন্ধকার, দারিদ্র্যেরওঅন্ধকার, সামাজিক অন্যায়েরও অন্ধকার। সামাজিক দোষত্রুটির – ব্যক্তিগত দোষত্রুটির ছায়াথেকে প্রদীপ জ্বালিয়ে মুক্তির, অন্ধকার থেকে আলোয় পৌঁছনোর উৎসব দীপাবলী। একটা কথাআমরা সবাই ভালো করেই জানি, ভারতবর্ষের যে কোনও প্রান্তে চলে যান, ধনীর থেকে ধনীরঘর কিংবা গরীবস্য গরীবের ঝুপড়ি দীপাবলীর সময় প্রতি পরিবারে স্বচ্ছতা অভিযান চলছেদেখা যায়। ঘরের প্রতিটি কোণ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা হয়। দরিদ্র মানুষ তাঁর মাটিরবাসনও এমনভাবে পরিষ্কার করেন যাতে মনে হয় দীপাবলী এসে গেছে। দীপাবলী এক স্বচ্ছতারওঅভিযান। কিন্তু সময়ের দাবী হল শুধু ঘরের পরিচ্ছন্নতা নয়, সমগ্র পরিবেশেরপরিচ্ছন্নতা, সমস্ত এলাকার পরিচ্ছন্নতা, পুরো গ্রামের পরিচ্ছন্নতা – আমাদের এইআচরণ, এই পরম্পরাকে আরও ছড়িয়ে দিতে হবে, আরও বিস্তৃতি দিতে হবে। দীপাবলীর এই উৎসবশুধু ভারতের মধ্যেই সীমাবদ্ধ হয়ে নেই, পৃথিবীর সব দেশেই কোনও না কোনও ভাবে দীপাবলীউৎসব পালন করা হয়। পৃথিবীর যে কোন জায়গার সরকার, সেখানকার সংসদ, শাসক – সবাইদীপাবলী উৎসবের অংশ হয়ে ওঠেন। তা সে দেশ পূর্বে হোক বা পশ্চিমে, উন্নত বাউন্নয়নশীল, আফ্রিকা কিংবা আয়ার্ল্যাণ্ড – সব জায়গাতেই দীপাবলীর ধুমধাম নজরে পড়ে।আপনাদের জানা আছে নিশ্চয়ই, আমেরিকার ইউ. এস. পোস্টাল সার্ভিস এই বছর দীপাবলীউপলক্ষে ডাকটিকিট প্রকাশ করেছে। কানাডার প্রধানমন্ত্রী দীপাবলীর সময় প্রদীপজ্বালাচ্ছেন – নিজের এই ছবি তুলে টুইটারের মাধ্যমে সকলের সঙ্গে শেয়ার করেছেন। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী লণ্ডনে দীপাবলীর জন্য,সমাজের সবাইকে যুক্ত করে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন এবং তাতে নিজেও অংশ নেন। আরইউ.কে.-তে হয়ত এমন কোন শহর নেই যেখানে ধুমধামের সঙ্গে দীপাবলী পালন করা হয় না।সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী ইনস্টাগ্রামের মাধ্যমে দীপাবলী উৎসব পালনের ছবি অত্যন্তগর্বের সঙ্গে সারা বিশ্বের সঙ্গে শেয়ার করেছেন। আর সেই ছবি কী? সিঙ্গাপুর সংসদের১৬ জন মহিলা সদস্য ভারতীয় শাড়ি পরে সংসদের বাইরে দাঁড়িয়ে ছবি তুলেছেন আর সেই ছবিসোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে ছড়িয়ে পড়েছে। আর এই সব করা হয়েছে দীপাবলীর জন্য।সিঙ্গাপুরে তো প্রতিটি রাস্তায়, প্রতিটি এলাকায় দীপাবলী উৎসব পালন করা হয়।অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী সমস্ত ভারতীয়দের দীপাবলীর শুভকামনা জানিয়েছেন। সেইসঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন শহরের সব মানুষকে দীপাবলী উৎসবের সঙ্গে যুক্ত হওয়ারআহ্বান জানিয়েছেন। সম্প্রতি নিউজিল্যাণ্ডের প্রধানমন্ত্রী এসেছিলেন, তিনি আমাকেবলেছিলেন যে তাঁকে তাড়াতাড়ি ফিরে যেতে হবে, কারণ তাঁকে দীপাবলী উৎসবে অংশ নিতেহবে। আমার এই কথা বলার তাৎপর্য এই যে দীপাবলী আলোর উৎসব, বিশ্বের সবাইকে অন্ধকারথেকে আলোর দিকে যাওয়ার প্রেরণা দেয় এই উৎসব। 

 দীপাবলী উৎসবে ভাল জামা-কাপড়, ভাল খাবার-দাবারের সঙ্গে বাজিফাটানো হয় খুব উৎসাহের সঙ্গে। আর ছোট-বড় সবাই খুব আনন্দ করে। কিন্তু কখনও কখনওছোটরা দুঃসাহস করে ফেলে। অনেক বাজি একত্রিত করে যাতে খুব আওয়াজও হয়, কিন্তু সেইসঙ্গে দুর্ঘটনাকেও আমন্ত্রণ জানায়। কখনও কখনও তাদের খেয়াল থাকে না যে আশেপাশে কিজিনিস আছে, তাতে সহজে আগুন ধরে যাবে কিনা। দীপাবলীর সময় দুর্ঘটনার খবর, আগুন লেগেযাওয়ার খবর, অপমৃত্যুর খবর খুব দুশ্চিন্তা জাগায়। আর এক অসুবিধা হয় দীপাবলীর সময় –ডাক্তারবাবুরা অনেকেই দীপাবলীতে পরিবারের সকলের সঙ্গে দীপাবলী উৎসব পালন করার জন্যবাড়ি চলে যান। ফলে বিপদের ওপর বিপদ এসে উপস্থিত হয়। আমার বিশেষভাবে মা-বাবারপ্রতি, অভিভাবকদের প্রতি অনুরোধ যে, ছোটরা যখন বাজি ফাটাবে, তখন বড়োদের সঙ্গে থাকাউচিত, কোনও ভুলচুক যেন না হয়। আমাদের দেশে দীপাবলী উৎসব খুব দীর্ঘ। তা খালিএকদিনের নয়, গোবর্ধন পূজা, ভাইফোঁটা, লাভ-পঞ্চমী থেকে কার্তিক-পূর্ণিমা পর্যন্তদীর্ঘদিন ধরে তা চলে। এর সঙ্গে আমরা ছট পূজার আয়োজনও করি। ভারতের পূর্ব প্রান্তেছট পূজা এক বড় উৎসব। এক রকম মহোৎসব এটি। চারদিন ধরে চলতে থাকে এই উৎসব। কিন্তু এরএক বিশেষত্ব আছে – সমাজকে এক গভীর বার্তা দেয় এই উৎসব। ভগবান সূর্যদেব আমাদের যাদেন, তাতে আমরা সবকিছু পেয়ে যাই। প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে ভগবান সূর্য দেবতারকাছ থেকে আমরা যা পাই, তার হিসেব করা আমাদের পক্ষে খুব কঠিন। এত কিছু আমরা সূর্যেরকাছ থেকে পাই। ছট পূজা সূর্য উপাসনার উৎসব। প্রবাদ আছে যে বিশ্বের সমস্ত মানুষউদিত সূর্যের পূজা করেন। ছট পূজা এক এমন উৎসব যেখানে অস্তগামী সূর্যেরও পূজা হয়।এর মধ্যে একটি খুব বড় সামাজিক বার্তা আছে। 

 আমি দীপাবলী উৎসবের কথা বলি, ছট পুজোর কথা বলি, এই উপলক্ষ্যেআপনাদের সবাইকে অনেক অনেক শুভকামনা জানানোর, বিশেষ করে দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানানোর,কৃতজ্ঞতা ব্যক্ত করার সময় এটাই। গত কয়েক মাসে, যে সব ঘটনা ঘটেছে, আমাদেরসুখনিদ্রার জন্য আমাদের সেনাবাহিনীর প্রতিটি জওয়ান নিজেদের সব কিছু ত্যাগ করেছেন। আমারমনোজগতে সেনা জওয়ান – সুরক্ষা বাহিনীর জওয়ানদের ত্যাগ, সাধনা, পরিশ্রম এক বিশেষপ্রভাব ফেলেছে। আর এজন্যই আমার মনে হয়েছে যে এই দীপাবলী সুরক্ষা বাহিনীর নামেঅর্পণ করার কথা। আমি দেশবাসীকে আহ্বান করেছি ‘সন্দেশ টু সোলজারস্‌’ নামে একঅভিযানে অংশ নেওয়ার জন্য। কিন্তু আজ আমি মাথা নত করে বলতে চাই যে ভারতবর্ষে এমনকোনো মানুষ নেই, যাঁর মনে দেশের সৈন্যবাহিনীর জন্য অপরিসীম ভালোবাসা নেই,সেনাবাহিনী নিয়ে গর্ব, প্রতিরক্ষা বাহিনী নিয়ে গর্ব নেই। যেভাবে মানুষ তা প্রকাশকরেছেন তা দেশবাসীকে আরও শক্তি দেবে। সুরক্ষা বাহিনীর জওয়ানদের ক্ষেত্রে তো আমরাকল্পনাই করতে পারি না, আপনাদের একটি বার্তা তাঁদের কতটা শক্তি দেয়। স্কুল, কলেজছাত্র, গ্রাম, গরীব, ব্যবসায়ী, দোকানদার, দেশনেতা, খেলোয়াড় বা সিনেমা জগতের মানুষ –মনে হয় এমন কেউ বাদ নেই যিনি দেশের জওয়ানদের উদ্দেশ্যে প্রদীপ জ্বালাননি, দেশেরজওয়ানদের জন্য বার্তা দেননি। গণমাধ্যমও এই দীপোৎসবকে সেনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতাজানানোর এক সুযোগ হিসেবে নিয়েছেন। আর কেনই বা করবেন না – বি.এস.এফ হোক,সি.আর.পি.এফ. হোক, ইন্দো-টিবেটান পুলিশ হোক, আসাম রাইফেল্‌স হোক, নৌবাহিনী, পদাতিকবাহিনী বা বায়ুসেনা হোক, বা কোস্ট গার্ড, আমি সবার নাম বলতে পারছি না, অগুনতি –আমাদের জওয়ানরা কী কী ধরনের কষ্ট সহ্য করেন তা ধারণার বাইরে। আমরা যখন দীপাবলীপালন করছি, তখন এঁরা কেউ মরুভূমিতে, কেউ হিমালয়ের কোনও শিখরে, কেউ শিল্প রক্ষাকরছেন, কেউ বিমানবন্দর রক্ষা করছেন। কত ধরণের দায়ভার তাঁরা পালন করছেন। আমরা যখনউৎসবের আমেজে রয়েছি, তখন তাঁদের কথা মনে করলে, তো এক নতুন শক্তি এসে যায়। একটিবার্তাতে ক্ষমতা বেড়ে যায়, দেশবাসী সেটাই করে দেখিয়েছেন। আমি সত্যি সত্যি দেশবাসীরপ্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে চাই। যিনি শিল্পী, তিনি শিল্পের মাধ্যমে বার্তাদিয়েছেন, কেউ ছবি, আলপনা, কার্টুন তৈরি করেছেন, যাঁর প্রতি সরস্বতীর কৃপাদৃষ্টিআছে তিনি কবিতা লিখেছেন। কেউ স্লোগান লিখেছেন। আমার মনে হয়েছে যে আমার ‘নরেন্দ্রমোদী অ্যাপ’ বা আমার ‘মাই গভ’, তাতে দেশবাসীর চিন্তা-ভাবনার তরঙ্গ উপছে পড়ছে –শব্দের মাধ্যমে, লেখার মাধ্যমে, রঙের মাধ্যমে আরও অগুনতি নানান ভাবে। আমি কল্পনাকরতে পারি, আমার দেশের জওয়ানদের জন্য এটা কত গর্বের সময়। ‘সন্দেশ টু সোলজারস্‌’ –এই হ্যাশট্যাগে কতরকম বার্তা, কতরকম ভাবে যে এসেছে।  

 শ্রীমান অশ্বিনী কুমার চৌহান একটি কবিতাপাঠিয়েছেন, আমি সেটি পড়ে শোনাতে চাই। অশ্বিনী কুমার লিখেছেন –  

“আমি উৎসব পালন করি,সানন্দে, সহাস্যে।  

আমি উৎসব পালন করিসানন্দে, সহাস্যে। 

আজ তোমাকে বলি, এসবসম্ভব হয় তুমি আছ বলেই। 

আমার স্বাধীনতা তোমারইজন্যে, তুমিই আমার খুশির উৎস 

আমি নিশ্চিন্তে ঘুমাতেপারি কারণ 

আমি নিশ্চিন্তে ঘুমাতেপারি কারণ তুমি আছ অতন্দ্র প্রহরায়, 

পর্বত, আকাশ এবংভারতভূমি তোমার কাছে মাথা নত করে, 

বীর সেনানী, আমিও তোমাকেশত শত প্রণাম জানাই।” 

আমার প্রিয় দেশবাসী,যাঁর বাপের বাড়ি এবং শ্বশুরবাড়ি – দুটি পরিবারের অনেকেই সেনাবাহিনীতে কর্মরত, এমনইএক বোন, শিবানী আমাকে একটি টেলিফোন মেসেজ পাঠিয়েছেন। আসুন এই সৈনিক পরিবারটি কীবলছে শুনি –  

“নমস্কারপ্রধানমন্ত্রীজী, আমি শিবানী মোহন বলছি। এই দীপাবলীতে যে ‘সন্দেশ টু সোলজার্‌স’অভিযান শুরু হয়েছে, তাতে আমাদের ফৌজি ভাইয়েরা বিশেষ উৎসাহ পেয়েছেন। আমার পরিবারএকটি সৈনিক পরিবার। আমার স্বামী একজন আর্মি অফিসার। আমার বাবা এবং শ্বশুরমশাইদু’জনেই আর্মি অফিসার ছিলেন। সীমান্তে আমাদের যেসব সেনা অফিসার আছেন, তাঁদের এবংআর্মি সার্কেলের সকলকেই এই ‘সন্দেশ’ বিশেষ অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে। আমি বলতে চাই যে,আর্মি অফিসার এবং সৈনিকদের সঙ্গে তাঁদের পত্নী এবং গোটা পরিবারকেই যথেষ্ট ত্যাগস্বীকার করতে হয়। অতএব একসঙ্গে গোটা সেনাগোষ্ঠীর কাছেই এর মাধ্যমে চমৎকার একটি বার্তাপৌঁছেছে। আমিও আপনাকে ‘হ্যাপি দিওয়ালি’ জানাতে চাই, ধন্যবাদ!” 

আমার প্রিয় দেশবাসীরা,একথা ঠিক যে, সেনা জওয়ানরা শুধু যে সীমান্তে প্রহরায় থাকেন তা-ই নয়, জীবনের নানাক্ষেত্রে তাঁদের সজাগ উপস্থিতি নজরে আসে। প্রাকৃতিক বিপর্যয় বা প্রশাসনিক সঙ্কটইহোক কিংবা শত্রুদের মোকাবিলা বা ভুল পথে চালিত যুবশক্তিকে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনা –আমাদের সাহসী সৈনিকরা জীবনের সব ক্ষেত্রেই দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে কাজে এগিয়েআসেন। 

একটি ঘটনা আমার নজরেএসেছে, যেটি আমি আপনাদের বলতে চাই। কিছু কিছু সাফল্য কীভাবে বিরাট এক শক্তি হয়েওঠে এটি তারই দৃষ্টান্ত। আপনারা শুনে থাকবেন, হিমাচল প্রদেশে মুক্ত শৌচালয় বন্ধকরা সম্ভব হয়েছে। সিকিম আগেই এই সাফল্য অর্জন করেছিল। ১ নভেম্বর থেকে কেরলের নামওএই তালিকায় যুক্ত হতে চলেছে। কীভাবে এই সাফল্য এলো, সেটাই বলছি – আমাদেরসেনাবাহিনীতে আই-টি-বি-পি’র এক জওয়ান আছেন শ্রী বিকাশ ঠাকুর, তাঁর বাড়ি হিমাচলপ্রদেশের সিরমৌর জেলার ছোটো গ্রাম বধানায় ছুটিতে তিনি গ্রামে গিয়েছিলেন। সেই সময়েসেখানে গ্রামসভা চলছিল। তিনি সেই সভায় পৌঁছন। গ্রাম সভায় তখন শৌচালয় বানানোর বিষয়েআলোচনা হচ্ছিল। এই আলোচনা থেকে জানা যায় যে, কিছু পরিবার টাকার অভাবে বাড়িতেশৌচালয় বানাতে পারছে না। শুনে দেশভক্ত জওয়ান বিকাশ ঠাকুরের মনে হল, এই কলঙ্ক দূরকরা দরকার। শুধু যে শত্রুপক্ষের ওপর গুলি চালানোর জন্যই তাঁরা দেশের সেবা করেন,তা-ই নয়, বিকাশ সঙ্গে সঙ্গে নিজের চেকবই বার করে ৫৭ হাজার টাকার একটি চেক কেটেপঞ্চায়েত প্রধানের হাতে দিয়ে বললেন, “যে ৫৭টি পরিবার টাকার জন্য শৌচালয় বানাতেপারছেন না, আমার তরফ থেকে তাঁদের প্রত্যেককে এক এক হাজার টাকা দিয়ে দিন, যাতেতাঁরা বাড়িতে শৌচালয় বানিয়ে বধানা গ্রামকে উন্মুক্ত শৌচালয় হীন করে তুলতে পারে।” 

বিকাশ ঠাকুর করেদেখিয়েছেন। ৫৭টি পরিবারকে নিজের পকেট থেকে এক-এক হাজার করে টাকা দিয়ে স্বচ্ছতাঅভিযানকে শক্তি যুগিয়েছেন। এইভাবেই হিমাচল প্রদেশ উন্মুক্ত শৌচালয় বিহীন রাজ্য হতেপেরেছে। এরকমই আমি কেরলের তরুণদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আমার মনে পড়ছে, কেরলেরপ্রান্তিক জঙ্গল এলাকায়, যেখানে যাওয়ার কোনও ভালো রাস্তাও নেই, পুরো দিন পায়েহেঁটে পৌঁছতে হয় – এরকম একটি জনজাতীয় পঞ্চায়েত ইড্‌মালাকুড়ির কথা। সহজে সেখানে কেউযায় না। নিকটবর্তী শহরের ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্রদের মনে হল ওই গ্রামে শৌচালয়বানানো দরকার। এন.সি.সি ক্যাডেট, এন.এস.এস-এর সদস্যরা, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজেরছাত্ররা সকলে মিলিতভাবে ঠিক করলেন, আমরা শৌচালয় বানাবো। এই যুবকরা নিজেদের কাঁধেকরে ইঁট, সিমেন্ট এবং শৌচালয় বানানোর অন্যান্য সামগ্রী নিয়ে সারাদিন পায়ে হেঁটে এইজঙ্গলে পৌঁছান। নিজেরা পরিশ্রম করে শৌচালয় বানান। এবং এই দূরবর্তী জঙ্গলের মধ্যেএকটি গ্রামকে উন্মুক্ত শৌচালয়-বিহীন করে তোলেন। এইভাবেই কেরালা রাজ্য উন্মুক্তশৌচালয়-মুক্ত হতে চলেছে। গুজরাতেও দেড়শটিরও বেশি মিউনিসিপ্যালিটি এবং কর্পোরেশনকেখোলা শৌচালয়-মুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। দশটি জেলাও এই তালিকায় এসেছে। হরিয়ানা থেকেওসুখবর এসেছে। আগামী ১লা নভেম্বর হরিয়ানা রাজ্য সুবর্ণজয়ন্তী পালন করতে চলেছে।তাঁরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, কয়েক মাসের মধ্যেই খোলা শৌচালয়-হীন রাজ্য করে তুলবেন।তাঁরা ইতিমধ্যেই সাতটি জেলায় এই কাজ সম্পন্ন করেছেন। প্রতিটি রাজ্যেই অত্যন্তদ্রুততার সঙ্গে এই কাজ এগোচ্ছে। আমি মাত্র কয়েকটিই উল্লেখ করলাম। আমি এই সবরাজ্যের নাগরিকদের এই সুমহান কাজে যোগদানের জন্য, দেশ থেকে অপরিচ্ছন্নতার অন্ধকারদূর করার প্রয়াসের জন্য অনেক অনেক অভিনন্দন জানাচ্ছি। 

আমার প্রিয় দেশবাসী,সরকার তো অনেকরকম পরিকল্পনা করেন। প্রথম পরিকল্পনার পরে যদি তার থেকে উন্নততর কোনওদ্বিতীয় পরিকল্পনা আসে, তবে প্রথমটিকে বাদ দিতে হয়। কিন্তু সাধারণত কেউ এইবিষয়টিতে নজর দেন না। ফলে পুরনো পরিকল্পনাটির সঙ্গে নতুন পরিকল্পনাও চলতে থাকে এবংপরবর্তী পরিকল্পনার জন্যও প্রতীক্ষা করা হয়। আমাদের দেশে যে সব বাড়িতে গ্যাসেরউনুন আছে, বিদ্যুৎ আছে, সেখানে কেরোসিনের কোনও প্রয়োজন নেই। কিন্তু সরকারে কে আরতার খোঁজ রাখে! কেরোসিনও যাচ্ছে, গ্যাসও যাচ্ছে, বিদ্যুৎ-ও যাচ্ছে। আর তার ফলেদালালদের তো পোয়াবারো। আমি হরিয়ানাকে অভিনন্দিত করতে চাই, কারণ তাঁরা তাঁদেররাজ্যকে কেরোসিন-মুক্ত করতে পেরেছে। কোন্‌ কোন্‌ পরিবারে গ্যাসের উনুন আছে,পরিবারে বিদ্যুৎ সংযোগ আছে তাঁরা সেটা আধার নম্বর দেখে নিশ্চিত করেছে। আমি শুনেছি,এপর্যন্ত সেরাজ্যে সাত কিংবা আটটি জেলা কেরোসিন-মুক্ত করা গেছে। যেভাবে তাঁরা এইকাজটি হাতে নিয়েছেন, তাতে আমার মনে হয়, পুরো রাজ্যই খুব শিগগিরি কেরোসিন-মুক্ত হয়েযাবে। কত বড় পরিবর্তন আসবে! চুরি বন্ধ হয়ে যাবে, পরিবেশের উপকার হবে, আমাদেরবিদেশী মুদ্রাও বাঁচবে আর সাধারণ মানুষের সুবিধাও বাড়বে। হ্যাঁ, কষ্ট যদি হয়, সেটাহবে দালাল আর বেইমানদের। 

আমার প্রিয় দেশবাসী,মহাত্মা গান্ধী সবসময়েই আমাদের সকলের পথপ্রদর্শক। দেশ কী করবে, কীভাবে করবে,সেবিষয়ে তাঁর যাবতীয় মতাদর্শকে এখনও দৃষ্টান্ত হিসেবে মানা হয়। গান্ধীজী বলতেন,যখনই আপনারা কোনও পরিকল্পনা করবেন, তখন দেশের গরীব এবং দুর্বল শ্রেণির কথা মনেরাখবেন এবং তারপর ভাববেন, আপনারা যা করতে যাচ্ছেন, তাতে এই মানুষগুলোর কোনও লাভহবে কিনা। তাঁদের কোনও ক্ষতি হবে না তো? এটাকে মনে রেখেই সিদ্ধান্ত নেবেন। সময়েরদাবি এটাই যে, গরীবদের মধ্যে যে উচ্চাশা জেগেছে, তাকে যথার্থ গুরুত্ব দিতে হবে।সমস্যা থেকে মুক্তির জন্য আমাদের একটার পর একটা পদক্ষেপ নিতে হবে। আমাদের পুরনোধ্যানধারণা যেমনই হোক না কেন, সমাজে ছেলে ও মেয়ের মধ্যে বিভেদ দূর করতেই হবে। এখনস্কুলগুলিতে ছাত্রীদের জন্য শৌচালয় আছে। ছাত্রদের জন্যও শৌচালয় আছে। এই সুযোগআমাদের কন্যাদের কাছে ভারতীয় সমাজে বিভেদমুক্তির নিদর্শনস্বরূপ।  

সরকারের পক্ষ থেকেটীকাকরণ তো হয়, কিন্তু তবুও লক্ষ লক্ষ শিশু টীকাকরণ কর্মসূচি থেকে বাদ পড়ে যায়।রোগের শিকার হয়। ‘মিশন ইন্দ্রধনুষ’ টীকাকরণ এরকমই একটি অভিযান, যার মধ্যে বাদযাওয়া শিশুদেরও সামিল করা হচ্ছে। এই কর্মসূচিটি শিশুদের ভয়ানক রোগগুলি থেকে মুক্তিদেওয়ার জন্য শক্তি যোগায়। একবিংশ শতাব্দীতে গ্রাম অন্ধকার থাকবে, সেটা হয় না। আরসেইজন্য গ্রামকে আঁধার থেকে মুক্ত করতে, গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছানোর অভিযান সাফল্যেরসঙ্গে এগিয়ে চলছে। ধার্য সময়সীমার থেকে আগে কাজ চলছে। স্বাধীনতার এতগুলো বছর পরেওদরিদ্র মা কাঠের উনুনে রান্না করে দিনে প্রায় চারশো সিগারেটের ধোঁয়া নিজের শরীরেনিচ্ছেন, ওঁদের স্বাস্থ্যের কী হাল হবে! চেষ্টা চলছে ৫ কোটি পরিবারকে ধোঁয়া থেকেমুক্তি দেওয়ার। এই অভিযানও সাফল্যের সঙ্গে এগিয়ে চলছে।

 ছোটোব্যবসায়ী, ছোটোখাটো দোকানদার, সব্জীওয়ালা, দুধ বিক্রেতা, ক্ষৌরকারেরা মহাজনের কাছেনেওয়া ঋণের ওপর চাপা সুদের বোঝায় ফেঁসে যায় – খুব খারাপ ভাবে ফেঁসে যায়। মুদ্রাযোজনা, স্ট্যাণ্ড-আপ যোজনা, জন ধন অ্যাকাউণ্ট - এই সবই সুদখোরদের হাত থেকে মুক্তিপাওয়ার এক সফল অভিযান। আধার কার্ডের মাধ্যমে অর্থ সরাসরি ব্যাঙ্কে পৌঁছে যাচ্ছে।প্রকৃত প্রাপকদের সরাসরি আর্থিক সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। সাধারণ মানুষের জীবনে দালালদেরহাত থেকে মুক্তি পাওয়ার সময় এসেছে। এমন একটি অভিযান চালাতে হবে যার মাধ্যমে কেবলবদল আর পরিবর্তনই নয়, সমস্যার থেকে মুক্তি পাওয়ার রাস্তা প্রশস্ত করতে হবে, আরসেটা হচ্ছেও। 

 আমারপ্রিয় দেশবাসী, আগামী কাল ৩১শে অক্টোবর, এই দেশের মহাপুরুষ ভারতের একতাকে যিনিজীবনের মূলমন্ত্র করেছিলেন এবং করেও দেখিয়েছিলেন – সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলেরজন্মজয়ন্তী। ৩১শে অক্টোবর একদিকে সর্দার সাহেবের জন্মজয়ন্তী, দেশের একতা রক্ষাকরার অগ্রগণ্য মহাপুরুষ, অন্যদিকে শ্রীমতী গান্ধীর পূণ্য তিথিও। মহাপুরুষদের পূণ্যতিথিস্মরণ তো আমরা করি, আর করাও দরকার। কিন্তু পঞ্জাবের এক ভদ্রলোকের ফোন, ওঁর দুঃখআমার হৃদয়কে স্পর্শ করে গেল। 

 “প্রধানমন্ত্রীমহোদয় নমস্কার। মহাশয়, আমি জসদীপ পঞ্জাব থেকে বলছি। মহাশয়, আপনি জানেন যে ৩১শে অক্টোবরসর্দার প্যাটেলের জন্মদিন। সর্দার প্যাটেল এমন একজন ব্যক্তি যিনি নিজের সারা জীবনদেশের অখণ্ডতার জন্য দিয়ে গেছেন এবং এই উদ্দেশে আমার মনে হয় সফলও হয়েছেন। তিনিসকলকে একত্রিত করেছেন, আর আমরা দেশের দুর্ভাগ্যই বলতে পারি বা বলি, যে ওই দিনইন্দিরা গান্ধীর হত্যাও হয়েছিল। এবং যেটা আমরা সবাই জানি, যে ওঁর হত্যার পর দেশেরমধ্যে কীরকম ঘটনা ঘটেছিল। মহাশয়, আমি এটা বলতে চাই যে এরকম দুর্ভাগ্যপূর্ণ যেসবঘটনা ঘটে, তা কীভাবে আমরা বন্ধ করতে পারি।”  

 প্রিয়দেশবাসী, এই দুঃখ একজনের নয়। এক সর্দার – সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল, ইতিহাস এইঘটনার সাক্ষী রয়েছে, চাণক্যের পর দেশকে একত্রিত করার মহান কাজ সর্দার বল্লভভাইপ্যাটেল করেছেন। স্বাধীন ভারতবর্ষকে একই পতাকার নীচে নিয়ে আসার সফল প্রয়াস, এতবড়বিশাল কাজ যে মহাপুরুষ করেছেন, সেই মহাপুরুষকে শত শত প্রণাম জানাই। কিন্তু এটাও তোএক দুঃখ, যে সর্দার সাহেব একতার জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন, লড়াই করেছেন, দেশের একতাওঁর মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল, তার জন্য কতজনের অসন্তোষের শিকারও হয়েছেন, কিন্তু একতাররাস্তাকে কখনও ছাড়েন নি। কিন্তু সেই সর্দারের জন্মজয়ন্তীতে হাজার হাজার সর্দারকে, হাজারহাজার সর্দার পরিবারকে শ্রীমতী গান্ধীর হত্যার পর, মৃত্যুর পথে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।একতার জন্য সারা জীবন যে মহাপুরুষ ব্যয় করে গেছেন, তাঁরই জন্মদিনে – সর্দারেরজন্মদিনে সর্দারদের উপর অত্যাচার, ইতিহাসের এই পৃষ্ঠা, আমাদের সবাইকে কষ্ট দেয়। 

 কিন্তুএই সংকটের মধ্যেও, একতার মন্ত্রকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। বিবিধের মধ্যে একতাই দেশেরশক্তি। অনেক ভাষা রয়েছে, জাতি অনেক, পোষাক অনেক, খাওয়া-দাওয়া অনেক কিন্তু এইবিবিধতার মধ্যে একতা – এটাই ভারতের শক্তি, ভারতের বিশেষতা। প্রত্যেক প্রজন্মেরএকটা দায়িত্ব রয়েছে, প্রত্যেক সরকারের দায়িত্বও রয়েছে, দেশের কোণে কোণে একতার উদাহরণখুঁজি, দেশের একতার নীতিকে বিকশিত করি। বিভেদের চিন্তাধারা, ভেদাভেদের প্রবৃত্তিথেকে আমরা যেন নিজেদের এবং দেশকে রক্ষা করি। সর্দার সাহেব আমাদের ‘এক ভারত’দিয়েছেন, আমাদের সবার দায়িত্ব হল ‘শ্রেষ্ঠ ভারত’ তৈরি করার। একতার মূল মন্ত্রইশ্রেষ্ঠ ভারত তৈরির ভিত প্রশস্ত করে। 

 সর্দারসাহেবের জীবন শুরু হয় কৃষক আন্দোলনের মাধ্যমে, কৃষকের ছেলে ছিলেন তিনি। স্বাধীনতাসংগ্রামের আন্দোলনকে কৃষকদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে সরদার সাহেবের এক বিশাল কৃতিত্বরয়েছে। স্বাধীনতার সংগ্রামকে গ্রামে শক্তি সঞ্চার করার সফল প্রয়াস ছিল সর্দার সাহেবের।তাঁর সাংগঠনিক শক্তি এবং কৌশলের পরিণামে সেটা সম্ভব হয়েছিল। কিন্তু সর্দার সাহেবকেবল সংঘর্ষই করতেন – তা নয়, গঠনের কাজেও তিনি অগ্রগণ্য। বর্তমানে কখনও কখনও আমরা‘আমূল’-এর নাম শুনি। ‘আমূল’-এর প্রত্যেক পণ্যর সঙ্গে আজ সমগ্র ভারত এবং ভারতবর্ষেরবাইরের মানুষও পরিচিত। কিন্তু কম লোকই জানেন যে দূরদর্শী সরদার সাহেব কো-অপারেটিভমিল্ক প্রোডিউসার’স-এর ইউনিয়ন তৈরির কল্পনা করেছিলেন। খেড়া জেলা, যেটা সেই সময়কেরা জেলা নামে পরিচিত ছিল – ১৯৪২ সালে এই ধারণার প্রতি জোর দেন এবং তার প্রকৃতরূপ আজকের ‘আমূল’ – কৃষকদের সুখ-সমৃদ্ধির জন্য সরদার সাহেব কী করে করেছিলেন তার একজীবন্ত উদাহরণ আমাদের সামনে রয়েছে। আমি সর্দার সাহেবকে শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদান করছি।এই ৩১শে অক্টোবর একতা দিবসে আমরা যেখানেই থাকি, সর্দার সাহেবকে স্মরণ করব, একতারসংকল্প নেব। 

 আমারপ্রিয় দেশবাসী, এই দীপাবলীর পরেই কার্তিক পূর্ণিমা, এটাও আলোর উৎসবের একটা অঙ্গ।গুরু নানক তাঁর শিক্ষা-দীক্ষা সমগ্র মানবজাতির জন্য, শুধুমাত্র ভারতবর্ষের জন্যনয়, সমগ্র মানবজাতির জন্য আজও সঠিক দিশা দর্শন করায়। সেবা, সত্য এবং প্রত্যেকেরভালো হোক, এটাই গুরু নানকের বার্তা। শান্তি, একতা এবং সদ্‌ভাবনা-ই তাঁর মূল মন্ত্রছিল। ভেদাভেদ, অন্ধ বিশ্বাস, কু-রীতি থেকে সমাজকে মুক্তি দেওয়ার অভিযান ছিল গুরুনানকের প্রত্যেক কথায়। যখন আমাদের সমাজে স্পৃশ্য-অস্পৃশ্য, জাতিভেদপ্রথা,উঁচু-নীচু, আর এদের বিকৃতি চরম সীমাতে ছিল, তখন গুরু নানক ভাই লালো-কে নিজেরসহযোগী বেছেছিলেন। আসুন, আমরাও গুরু নানক যে জ্ঞানের আলো আমাদের দিয়েছেন, যাআমাদের ভেদাভেদ ত্যাগ করার প্রেরণা দেয়, ভেদাভেদের বিরুদ্ধে কিছু করার আদেশ দেয়সেটা পালন করি। ‘সকলকে নিয়ে সকলের উন্নতি’ – এই মন্ত্র নিয়ে যদি আমাদের এগিয়ে চলতেহয়, তো গুরু নানক-এর থেকে ভালো আমাদের পথপ্রদর্শক কে হতে পারে। আমি গুরু নানককেওআসন্ন প্রকাশ উৎসবে হৃদয়ের অন্তস্থল থেকে প্রণাম জানাই। 

 আমারপ্রিয় দেশবাসী, আরও একবার, দেশের সৈনিকদের নামে উৎসর্গীকৃত এই দীপাবলী, এই দীপাবলীউপলক্ষে আপনাদের অনেক অনেক শুভকামনা। আপনার স্বপ্ন, আপনার সংকল্প সবরকম ভাবে সফলহোক। আপনার জীবন সুখ-শান্তিতে ভরে থাকুক, এই শুভকামনা সকলকে জানাচ্ছি।  অনেক অনেক ধন্যবাদ!