India & Indonesia agree to prioritize defence and security cooperation.
India & Indonesia agree to build a strong economic & development partnership that strengthens the flow of ideas, trade, capital etc
Both countries agree to work closely in the fields of pharmaceuticals, IT & software, & skill development.
Agreement to speed up establishment of Chairs of Indian & Indonesian Studies in each other's universities.

মাননীয়প্রেসিডেন্ট জোকো উইডোডো,

বিশিষ্টপ্রতিনিধিবৃন্দ,

সংবাদমাধ্যমেরসঙ্গে যুক্ত বন্ধুগণ,

প্রথমেইআমি অ্যাসেহ-এর সাম্প্রতিক ভূমিকম্পে প্রাণহানির ঘটনায় গভীর সমবেদনা জানাই।

বন্ধুগণ, প্রেসিডেন্টজোকো উইডোডো-র প্রথম রাষ্ট্রীয় ভারত সফর উপলক্ষে আমি তাঁকে স্বাগত জানাই।প্রেসিডেন্ট উইডোডো-র সঙ্গে আমার প্রথম সাক্ষাৎ ঘটে ২০১৪-র নভেম্বরে। আমাদেরদ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক কিভাবে দুটি দেশ এবং এই অঞ্চলের কল্যাণ নিশ্চিত করতে পারে সেসম্পর্কে ঐ সময় বিশদভাবে এক আলোচনায় মিলিত হয়েছিলাম আমরা।

মাননীয়প্রেসিডেন্ট, একমহান রাষ্ট্রের আপনি নেতৃত্ব দিচ্ছেন। বিশ্বের বৃহত্তম মুসলিম জনসংখ্যা-প্রধানএকটি রাষ্ট্র হিসেবে গণতন্ত্র, বৈচিত্র্য, বহুত্ববাদ এবং সামাজিক সম্প্রীতিরপ্রতীকই হল ইন্দোনেশিয়া। তাঁদের এই মূল্যবোধের সঙ্গে মিলে যায় আমাদের নিজস্বমূল্যবোধগুলিও। আমাদের এই দুটি দেশ ও সমাজ ব্যবস্থার মধ্যে এক দীর্ঘ ঐতিহাসিক,বাণিজ্যিক তথা সাংস্কৃতিক বন্ধন রয়েছে। আমরা বাস করি এমন এক ভৌগোলিক অবস্থানে যাদ্রুত রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক তথা কৌশলগত পরিবর্তনের একটি কেন্দ্র হিসেবে কাজ করেচলেছে বর্তমান বিশ্বে। আপনার এই সফর আমাদের কৌশলগত অংশীদারিত্বের সম্পর্কে উৎসাহেরসঙ্গেই এক নতুন মাত্রা যোগ করতে চলেছে। ভারত-প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে শান্তি,সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে এবং তাকে একটি বিশেষ আকার দান করতে তানানাভাবে সহায়তা করেছে।

বন্ধুগণ, আমাদের‘পূবে তাকাও নীতি’র এক মূল্যবান সহযোগী হিসেবে আমরা পেয়েছি ইন্দোনেশিয়াকে। এইদেশটি হল দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এক বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ। অন্যদিকে আবার, বিশ্বেদ্রুত গতিতে বেড়ে ওঠা এক বৃহৎ অর্থনীতির দেশ হল ভারত। দুটি বৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশএবং ক্রমশ এগিয়ে চলা অর্থনীতি হিসেবে আমাদের মধ্যে রয়েছে অর্থনৈতিক এবং কৌশলগত স্বার্থেরসম্পর্ক। একইসঙ্গে আমরা কতকগুলি সাধারণ চ্যালেঞ্জ ও উদ্বেগেরও সমান অংশীদার।আমাদের সহযোগিতার সবক’টি দিক সম্পর্কেই আজ আমি সবিস্তার আলোচনা করেছি মাননীয়প্রেসিডেন্টের সঙ্গে। প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সহযোগিতাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার বিষয়েওএকমত হয়েছি আমরা। শুধুমাত্র দুটি মহাসাগরীয় দেশই নয়, আমরা পরস্পরের প্রতিবেশীওবটে। তাই, সমুদ্রপথগুলির সুরক্ষা ও নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করতে পরস্পরেরসহযোগী হয়ে ওঠার প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়েছি আমরা। বিপর্যয় মোকাবিলা এবংপরিবেশ-সুরক্ষার লক্ষ্যে এই সহযোগিতাকে আমরা আরও জোরদার করে তুলতে আগ্রহী।নৌ-সহযোগিতা প্রশ্নে আমাদের যৌথ বিবৃতিতেই এই ক্ষেত্রটিতে আমাদের কর্মসূচির একটিরূপরেখা তুলে ধরা হয়েছে। আমাদের এই পারস্পরিক সহযোগিতা সন্ত্রাস, পরিকল্পিত অপরাধএবং মাদক ও মানবপাচারের মতো ঘটনার মোকাবিলার কাজেও সম্প্রসারিত হবে।

বন্ধুগণ, দুটিদেশের মধ্যে চিন্তাভাবনা, বাণিজ্যিক প্রসার, মূলধনের যোগান এবং পরস্পরের নাগরিকদেরমধ্যে সম্পর্ককে জোরদার করে তোলার বিষয়েও সহমত প্রকাশ করেছি আমি এবং মাননীয়প্রেসিডেন্ট। কারণ, আমাদের লক্ষ্য হল এক শক্তিশালী অর্থনৈতিক তথা উন্নয়ন সহযোগিতারসম্পর্ক গড়ে তোলা। ওষুধ উৎপাদন, তথ্যপ্রযুক্তি ও সফ্‌টওয়্যার এবং দক্ষতা বিকাশের মতোক্ষেত্রগুলিতে ভারতীয় সংস্থাগুলি যাতে ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার মধ্যদিয়ে কাজ করতে পারে সেজন্য উৎসাহদানের প্রশ্নেও সম্মতি জানিয়েছি আমরা। দুটিবিকাশশীল দেশ হিসেবে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি পরিকাঠামো বিকাশ, বিনিয়োগের আদানপ্রদানসহ সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রগুলিতে সহযোগিতা সম্প্রসারণের। এই বিষয়টিতে শিল্প প্রসারেরসম্ভাবনাকে আরও প্রশস্ত করার লক্ষ্যে এবং শিল্প সংক্রান্ত সমঝোতাকে আরও গভীরে নিয়েযেতে সিইও-দের ফোরামটি নেতৃত্বদানের মতো অবস্থায় রয়েছে বলেই আমরা মনে করি। পরিষেবাও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ভারত-আসিয়ান মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিটি যাতে দ্রুত রূপায়িত হয়তা নিশ্চিত করার কাজেও আমরা সহমত প্রকাশ করেছি। এই ক্ষেত্রটিতে আঞ্চলিক পর্যায়েসুসংবদ্ধ অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বের সম্পর্কটিকে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে আমরামনে করি। মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে গত দু’দশক ধরে আমাদের যে মূল্যবান সহযোগিতারসম্পর্ক গড়ে উঠেছে তাকে আরও গভীরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টিকেও বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছিআমরা। আমাদের এই সহযোগিতার সম্পর্ককে অটুট রাখতে বর্তমান মন্ত্রী পর্যায়ের কাঠামোয়যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এক বৈঠক আয়োজনের নির্দেশ দিয়েছি প্রেসিডেন্ট উইডোডো এবং আমি।

বন্ধুগণ, আমাদেরদু’দেশের সমাজ ব্যবস্থায় যে শক্তিশালী সাংস্কৃতিক সম্পর্ক ও ঐতিহাসিক বন্ধন রয়েছেতা আমাদের দুটি রাষ্ট্রেরই এক মিলিত ঐতিহ্য। আমাদের এই ঐতিহাসিক সম্পর্কেরক্ষেত্রে গবেষণার কাজকে উৎসাহ ও গুরুত্বদানের প্রশ্নেও সম্মতি জানিয়েছি আমি এবংমাননীয় প্রেসিডেন্ট। দু’দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ভারত ও ইন্দোনেশিয়া সম্পর্কেপঠনপাঠনের কাজে বিশেষ অধ্যাপকের পদ সৃষ্টির কাজটি দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রশ্নেওসহমত জানিয়েছি আমরা। শুধু তাই নয়, বৃত্তি প্রদান ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচির প্রসারেওআমরা পারস্পরিক সম্মতি জানিয়েছি। দু’দেশের মধ্যে প্রত্যক্ষ যোগাযোগ এবং মানুষে-মানুষেসম্পর্ক প্রসারের গুরুত্ব কারোরই অজানা নয়। তাই, মুম্বাইয়ের সঙ্গে আকাশপথে সরাসরিযোগাযোগ স্থাপনের জন্য ‘গড়ুর ইন্দোনেশিয়া ইন্টারন্যাশনাল’-এর সিদ্ধান্তকে আমরাস্বাগত জানাই।

মাননীয়প্রেসিডেন্ট, এইসফরের জন্য আমি আরও একবার ধন্যবাদ জানাই আপনাকে। আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে একনতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে আপনার মতো আমিও আজ বিশেষভাবে আগ্রহী। আমি আশাবাদী যেআমাদের পারস্পরিক আলোচনা ও চুক্তি যা এখানে আজ স্বাক্ষরিত হল, তা আমাদের কর্মসূচিররূপরেখা তৈরিতে বিশেষভাবে সাহায্য করবে। শুধু তাই নয়, আমাদের কৌশলগত অংশীদারিত্বেরক্ষেত্রে তা এক নতুন দিশা এবং বিশেষ গভীরতা এনে দেবে। আমার বক্তব্য শেষ করার আগেইন্দোনেশিয়ার সকল বন্ধুদের জানাই ধন্যবাদ।

ধন্যবাদ,অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাদের সকলকেই।