PM Modi attends Pravasi Bharatiya Divas 2017
Indians abroad are valued not just for their strength in numbers. They are respected for the contributions they make: PM
The Indian diaspora represents the best of Indian culture, ethos and values: PM
Engagement with the overseas Indian community has been a key area of priority: PM
The security of Indian nationals abroad is of utmost importance to us: PM

মাননীয় বিশিষ্টজন ও বন্ধুবর্গ,

শুরুতেই পর্তুগালের প্রাক্তন রাষ্ট্রপ্রধান, প্রধানমন্ত্রী তথা বিশ্বের এক স্বীকৃত রাজনীতিকের মৃত্যুতে পর্তুগালের সরকার ও জনসাধারণের উদ্দেশে আমাদের গভীর সমবেদনা জানাই। ভারত ও পর্তুগালের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে তিনিছিলেন এক স্থপতি-পুরুষ। এই শোকের মুহূর্তে আমাদের পূর্ণ সমর্থন ও সহায়তা নিয়ে আমরা রয়েছি পর্তুগালের সঙ্গেই।

সুরিনামেরভাইস প্রেসিডেন্ট মাননীয় শ্রী মাইকেল অশ্বিন আদিন এবং পর্তুগালের মাননীয়প্রধানমন্ত্রী ডঃ অ্যান্টোনিও কোস্তা,

কর্ণাটকেররাজ্যপাল শ্রী বাজু ভাইওয়ালা, কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী সিদ্ধারামাইয়াজি,

মাননীয়মন্ত্রীগণ, দেশ-বিদেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এবং

সবথেকেযাঁরা বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা আমাদের সেই প্রবাসীভারতীয় ভাই-বোনেরা।

চতুর্দশপ্রবাসী ভারতীয় দিবস উপলক্ষে আপনাদের সকলকে স্বাগত জানাতে পেরে আমি আনন্দিত।আপনারা অনেকেই দূর-দূরান্ত থেকে পাড়ি দিয়ে আজ এখানে আমাদের সঙ্গে মিলিত হয়েছেন।ডিজিটাল মঞ্চের মাধ্যমে এই অনুষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন আরও লক্ষ লক্ষ মানুষ।

আজকেরএই দিনটি আরেকটি কারণে স্মরণীয়। এই দিনেই শ্রদ্ধেয় মহাত্মা গান্ধী প্রবাস থেকেপ্রত্যাবর্তন করেছিলেন ভারতে।

এইদিনটি আমরা পালন করছি মনোরম বেঙ্গালুরু শহরে। এই ধরনের একটি অনুষ্ঠানেরউদ্যোগ-আয়োজন এবং তাকে বিরাটভাবে সাফল্যমণ্ডিত করে তোলার জন্য যে প্রচেষ্টা ওসহায়তা করে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী শ্রী রামাইয়াজি ও তাঁর সরকার, সেজন্য তাঁদের আমিধন্যবাদ জানাই।

আমিবিশেষভাবে স্বাগত জানাই পর্তুগালের প্রধানমন্ত্রী, সুরিনামের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবংমালয়েশিয়া ও মরিশাসের মাননীয় মন্ত্রীবর্গকে।

তাঁদেরসাফল্য এবং নিজেদের দেশে তথা সমগ্র বিশ্বে তাঁদের অর্জিত সুনাম ও সুখ্যাতি থেকেআমরা অনুপ্রেরণা লাভ করতে পারি। সমগ্র বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা ভারতীয়দের গর্ব, সাফল্য ওকঠোর শ্রমেরও প্রতিফলন ঘটেছে। বিদেশে বর্তমানে প্রবাসী ভারতীয়ের সংখ্যা ৩ কোটিরওবেশি। তাঁরা পদার্পণ করেছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। বিদেশে ভারতীয়দের বিশেষমূল্যবান সম্পদ বলে মনে করা হয় শুধুমাত্র সংখ্যার কারণেই নয়। ভারতে তথা যেদেশগুলিতে তাঁরা বসবাস করেন সেখানকার সমাজে তাঁদের বিশেষ অবদানের জন্যই তাঁরাসকলের শ্রদ্ধার পাত্র। বিদেশের মাটিতে এবং বিভিন্ন সমাজ ও সম্প্রদায়ের মধ্যেযেখানে যেভাবেই তাঁরা থাকুন না কেন এবং যে পথই অনুসরণ করে থাকুন না কেন, কিংবা যেলক্ষ্যপূরণের দিকেই এগিয়ে যান না কেন, প্রবাসী ভারতীয়রা ভারতীয় সংস্কৃতি, মূল্যবোধও নীতির শ্রেষ্ঠ দিকগুলিই সর্বদা তুলে ধরেন। তাঁদের কঠোর শ্রম, নিয়মানুবর্তিতা,আইনের প্রতি আনুগত্য এবং শান্তিপ্রিয় মানসিকতা বিশ্বের অন্যান্য দেশ থেকে আগতবিভিন্ন সম্প্রদায়ের কাছে এক আদর্শ বিশেষ।

বন্ধগণ,প্রবাসী ভারতীয় সম্প্রদায়ের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা হল ব্যক্তিগতভাবে আমার এবংআমার সরকারের কাছে এক বিশেষ অগ্রাধিকারের বিষয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য,অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, সংযুক্ত আরব আমিরশাহী, কাতার, সিঙ্গাপুর, ফিজি, চিন,জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, কেনিয়া মরিশাস, সিসিলি দ্বীপপুঞ্জ এবং মালয়েশিয়া সহ বিশ্বেরবিভিন্ন দেশ সফরকালে আমি অসংখ্য প্রবাসী ভারতীয় ভাই-বোনদের সঙ্গে আলাপচারিতায়মিলিত হয়েছি। এর ফলে, ভারতের আর্থ-সামাজিক রূপান্তর প্রচেষ্টায় আরও বেশি করে যুক্তহওয়ার উৎসাহ, উদ্যম ও শক্তি সঞ্চারিত হয়েছে তাঁদের মধ্যে।

প্রবাসীভারতীয়রা প্রতি বছর যে ৬৯ বিলিয়ন ডলার এ দেশে পাঠিয়ে থাকেন, তা ভারতীয় অর্থনীতিরপক্ষে বিশেষ মূল্যবান সম্পদ।

অনাবাসীও প্রবাসী ভারতীয়দের অবদান ছড়িয়ে রয়েছে বিভিন্ন ক্ষেত্রে। তাঁদের মধ্যে অনেকেইরাজনীতি, বিজ্ঞান, চিকিৎসা, শিক্ষা, অর্থনীতি, সঙ্গীত, মানবতাবাদ, সাংবাদিকতা,ব্যাঙ্কের কাজকর্ম, প্রযুক্তি এবং আইনগত পেশার সঙ্গে বিশেষভাবে যুক্ত। এর বাইরেওরয়েছেন দেশের নামকরা তথ্যপ্রযুক্তিবিদরা। আগামীকাল ৩০ জন প্রবাসী ভারতীয়রাষ্ট্রপতির হাত থেকে গ্রহণ করবেন প্রবাসী ভারতীয় সম্মান পুরস্কার। দেশে-বিদেশেবিভিন্ন ক্ষেত্রে তাঁদের অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এই পুরস্কার দেওয়া হয়ে থাকে।

বন্ধুগণ,তাঁদের পেশা ও প্রেক্ষাপট নির্বিশেষে বিদেশে বসবাসকারী সকল ভারতীয়ের কল্যাণ ওনিরাপত্তার বিষয়টি আমাদের অগ্রাধিকারের মধ্যেই পড়ে। এজন্য সমগ্র প্রশাসনিকব্যবস্থাটিকে আমরা আরও জোরদার করে তুলছি। পাসপোর্ট খোয়া গেলে কিংবা আইনগত পরামর্শ,আশ্রয়, চিকিৎসা সহায়তা এমনকি প্রবাস জীবনে কারোর মৃত্যু হলে তাঁর মরদেহ ভারতে নিয়েআসার বিষয়গুলিও আমরা বিশেষ অগ্রাধিকারের সঙ্গে বিবেচনা করি। বিদেশে বসবাসকারীভারতীয় নাগরিকদের যে কোনরকম সমস্যার সমাধানে সক্রিয় উদ্যোগ গ্রহণের জন্য আমিনির্দেশ দিয়েছি সমস্ত ভারতীয় দূতাবাসকে।

প্রবাসীভারতীয়দের যে কোন ধরনের চাহিদা পূরণে গতি, সংবেদনশীলতা ও দ্রুততার সঙ্গে কাজ করেথাকি আমরা। সপ্তাহের সাতদিন, ২৪ ঘন্টাই এজন্য আমরা বিশেষ তৎপর রয়েছি। এই লক্ষ্যেভারতীয় দূতাবাসগুলিতে খোলা হয়েছে বিশেষ হেল্পলাইন। প্রবাসী ভারতীয়দের সঙ্গে মুক্তআলোচনা-বৈঠক, মতবিনিময় শিবির, পাসপোর্ট পরিষেবার জন্য ট্যুইটার সেবা এবং দ্রুতবার্তা আদান-প্রদানের জন্য সোশ্যল মিডিয়ার মঞ্চ ব্যবহার আমাদের এক্ষেত্রেকাজকর্মের কয়েকটি বিশেষ দৃষ্টান্ত। এর মধ্য দিয়েই প্রবাসী ভারতীয়দের কাছে আমরা আমরাএই বার্তা পাঠিয়ে থাকি যে, যে কোন প্রয়োজনে আপনাদের পাশেই রয়েছি আমরা।

প্রবাসীভারতীয়দের নিরাপত্তার বিষয়টি আমাদের কাছে সবথেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমরা তাঁদেরপাসপোর্টের রঙের কথা চিন্তা করি না, ভারতীয় রক্ত যে বাহিত হচ্ছে তাঁদেরও শরীরেএটাই আমরা চিন্তা করি। যখনই কোন দেশে ভারতীয়রা বিপন্ন হয়ে পড়েন, আমরা ছুটে যাইতাঁদের নিরাপত্তা, উদ্ধার ও দেশে ফিরিয়ে আনার কাজে। সোশ্যল মিডিয়ার মঞ্চ ব্যবহারেরমাধ্যমে দুর্গত প্রবাসী ভারতীয়দের কাছে দ্রুত সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রেবিশেষভাবে সক্রিয় রয়েছেন আমাদের বিদেশ মন্ত্রী শ্রীমতী সুষমা স্বরাজজি।

২০১৬-রজুলাই মাসে ‘সঙ্কটমোচন’ অভিযান চালিয়ে মাত্র ৪৮ ঘন্টার মধ্যে দক্ষিণ সুদানের ১৫০জন প্রবাসী ভারতীয়কে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে আনতে পেরেছিলাম। তারও আগে, ইয়েমেনেরসঙ্কটজনক পরিস্থিতিতে সুষ্ঠুভাবে এবং ঘনিষ্ঠ সমন্বয় রক্ষার মাধ্যমে দ্রুত আমরানিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে আসতে পেরেছিলাম কয়েক হাজার ভারতীয় নাগরিককে। ২০১৪ এবং ২০১৬ –শেষের এই দুটি বছরে প্রায় ৫৪টি দেশ থেকে ৯০ হাজারেরও বেশি ভারতীয় নাগরিককে আমরাস্বদেশে ফিরিয়ে এনেছি। ভারতীয় সম্প্রদায়ের জন্য নির্দিষ্ট কল্যাণ তহবিল থেকেআপৎকালীন পরিস্থিতিতে ৮০ হাজারেরও বেশি প্রবাসী ভারতীয়কে আমরা সহায়তাদান করেছি।

প্রত্যেকপ্রবাসী ভারতীয়ের জন্য আমাদের সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য হল এই যে এমনভাবে কাজ করে যাওয়াযাতে তাঁরা কখনই মনে না করেন যে তাঁদের স্বদেশভূমি রয়েছে অনেক অনেক দূরে। যে সমস্তকর্মী বিদেশে অর্থনৈতিক কর্মপ্রচেষ্টার সুযোগ লাভ করতে ইচ্ছুক, তাঁদের জন্য আমরাচেষ্টা করি সর্বোচ্চ মাত্রায় সুযোগ-সুবিধা প্রসারের জন্য। তাঁরা যেন কোনভাবেইঅসুবিধার সম্মুখীন না হয়ে পড়েন, সেদিকেও বিশেষ লক্ষ্য রাখি আমরা। আমাদের মন্ত্রইহল : “প্রশিক্ষণগ্রহণের মাধ্যমে নিরাপদে যাত্রা করে বিশ্ববাসীর সঙ্গে মিলিত হও।” এই লক্ষ্যে সমগ্রপদ্ধতিগত ব্যবস্থাকে আমরা সংহত করে তুলেছি। সেইসঙ্গে, বিদেশে কাজের সুযোগ লাভেরক্ষেত্রে ভারতীয় কর্মীরা যাতে সর্বদা সুরক্ষিত থাকেন তা নিশ্চিত করাও আমাদেরউদ্দেশ্য। দেশের ৬ লক্ষ প্রযুক্তিবিদকে অনলাইন ব্যবস্থায় বিদেশে কর্মসংস্থানেরজন্য প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। নথিভুক্ত নিয়োগ সংস্থাগুলির মাধ্যমে তাঁদেরবেছে নেওয়া হয়। ই-মাইগ্রেট পোর্টালটিতে বিদেশের নিয়োগ কর্তাদের নথিভুক্তিবাধ্যতামূলক করে তোলা হয়েছে।

কর্মসংস্থানেরসুযোগ লাভের জন্য যে সমস্ত কর্মী বিদেশ যাত্রা করেন তাঁদের ক্ষোভ, অভিযোগ এবংআবেদন সম্পর্কে ব্যবস্থা নেওয়া হয় ‘ই-মাইগ্রেট’ এবং ‘মদত’ – এই অনলাইন মঞ্চগুলিরমাধ্যমে। বিদেশের কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে যে সমস্ত সংস্থা বেআইনিভাবে কাজকর্ম করেথাকে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থাও আমরা গ্রহণ করে থাকি। সিবিআই এবং রাজ্য পুলিশকর্তৃপক্ষের সাহায্যে এই ধরণের বেআইনি এজেন্টদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করেথাকি। কর্মসংস্থান সম্পর্কিত এজেন্টদের বাধ্যতামূলকভাবে ব্যাঙ্কে গচ্ছিত গ্যারান্টিআমানতের পরিমাণও ২০ লক্ষ টাকা থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ৫০ লক্ষ টাকা। এ সমস্ত কিছুইআমাদের গৃহীত পদক্ষেপগুলির অন্যতম। যে সমস্ত ভারতীয় কর্মী বিদেশে উন্নততরঅর্থনৈতিক কাজকর্মের সুযোগ লাভে আগ্রহী, তাঁদের জন্য আমরা অচিরেই ‘প্রবাসী কৌশলবিকাশ যোজনা’ নামে একটি দক্ষতা বিকাশ কর্মসূচির সূচনা করব। কাজের সুযোগ লাভের জন্যযে সমস্ত ভারতীয় যুবক-যুবতী বিদেশ যাত্রা করতে চান, তাঁদের জন্যই রচিত এই বিশেষকর্মসূচিটি।

বন্ধুগণ,প্রবাসী ভারতীয় সমাজের সঙ্গে আমরা এক বিশেষ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছি। উৎস-ভূমির সঙ্গেতাঁদের রয়েছে এক গভীর আবেগের সম্পর্ক। চার-পাঁচ প্রজন্ম আগে থেকেই যাঁরা বিদেশে বসবাসকরছেন, ভারতীয় বংশোদ্ভূত সেই সমস্ত মানুষ ওসিআই কার্ড পাওয়ার ক্ষেত্রে যে নানাধরণের অসুবিধার সম্মুখীন হন, সে সম্পর্কেও আমরা ওয়াকিবহাল। তাঁদের চিন্তা ওউদ্বেগের অংশীদার হিসেবে এই সমস্যার সমাধানে আমরা সচেষ্ট রয়েছি।

আমিআনন্দের সঙ্গে ঘোষণা করছি যে এ দেশ থেকে যাঁরা বিদেশে স্থানান্তরিত হয়েছেন ওসিআইকার্ড পাওয়ার জন্য যাতে তাঁরা যোগ্য বলে বিবেচিত হন, সেই লক্ষ্যে আমরা নতুন পদ্ধতিও নথিগত ব্যবস্থা চালু করার কাজে সচেষ্ট রয়েছি। মরিশাসে বসবাসকারী ভারতীয়প্রজন্মগুলির জন্য এই কাজের মধ্য দিয়েই সূচনা হবে আমাদের এই বিশেষ কর্মসূচিটির।ফিজি, রিইউনিয়ন আইল্যান্ডস্‌, সুরিনাম, গুয়ানা এবং অন্যান্য ক্যারিবিয়ানরাষ্ট্রগুলিতে এই ধরনের অসুবিধা দূর করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

বিগতপ্রবাসী ভারতীয় দিবসের অনুষ্ঠানে আমি যে আবেদন জানিয়েছিলাম, তারই সঙ্গে সঙ্গতিরেখে আমি সকল পিআইও কার্ডধারীদের উৎসাহিত করব যে তাঁদের সেই কার্ডগুলিকে যেন তাঁরাওসিআই কার্ডে রূপান্তরিত করিয়ে নেন। আমি একথা ঘোষণা করতে পেরে আরও খুশি হব যেকার্ড রূপান্তরের এই কর্মসূচির সুযোগ লাভের জন্য অন্তিম দিন ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৬থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ৩০ জুন, ২০১৭। এজন্য পেনাল্টিবাবদ কোনরকম অর্থ প্রদান করতেহবে না। এ বছর জানুয়ারি মাস থেকেই দিল্লি ও বেঙ্গালুরু বিমানবন্দরে ওসিআইকার্ডধারীদের জন্য আমরা বিশেষ কাউন্টারও স্থাপন করেছি।

বন্ধুগণ,বর্তমানে ৭ লক্ষ ভারতীয় ছাত্রছাত্রী বিদেশে পঠনপাঠনের কাজে যুক্ত রয়েছে। আনন্দেরবিষয়, বিদেশে তাঁরা ভারতের প্রগতিশীল ভাবধারারই ধারক ও বাহক। তাঁদের জ্ঞান,বিজ্ঞান অনুসন্ধিৎসা এবং ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ভারতের আর্থিক অগ্রগতিকে আরও বহুদূরনিয়ে যাবে বলে আমরা আশা করি। প্রযুক্তিক্ষেত্রে তাঁরা যে বিশেষ সাফল্যের অধিকারীহবেন এ বিষয়ে আমার কোন সন্দেহ নেই।

এইলক্ষ্যে আমরা কয়েকটি পদক্ষেপও গ্রহণ করেছি। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দপ্তরের পক্ষ থেকে‘ভিজিটিং অ্যাডজাঙ্কট জয়েন্ট রিসার্চ ফ্যাকাল্টি’-র সূচনা করা হবে। এর আওতায়অনাবাসী ভারতীয় এবং বিদেশের বৈজ্ঞানিক কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা ভারতেরগবেষণা ও উন্নয়নের কাজে নিজেদের অবদান রাখার সুযোগ পাবেন। শুধু তাই নয়, এইকর্মসূচির মাধ্যমে একজন প্রবাসী ভারতীয় ভারতের কোন একটি সংস্থায় এক থেকে তিন মাসপর্যন্ত কাজ করতে পারবেন। এর শর্তাবলীও যথেষ্ট আকর্ষণীয়। এক্ষেত্রে সবচেয়েগুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হল, এর মধ্য দিয়ে প্রবাসী ভারতীয়রা দেশের অগ্রগতির কাজে একবিশেষ অংশীদার হয়ে উঠতে পারবেন।

বন্ধুগণ,আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে ভারতের সঙ্গে প্রবাসী ভারতীয়দের সংযোগ ও যোগাযোগনিরবচ্ছিন্ন থাকবে এবং তাতে সমৃদ্ধ হবে উভয় পক্ষই। এই লক্ষ্য পূরণে গত বছর অক্টোবরমাসে মহাত্মা গান্ধীর জন্মদিনে নয়াদিল্লিতে প্রবাসী ভারতীয় কেন্দ্রের উদ্বোধন করতেপেরে আমি নিজেকে সম্মানিত বোধ করেছি। বিদেশে বসবাসকারী ভারতীয় সম্প্রদায়ের সমগ্রবিশ্বে কাজের সূত্রে ছড়িয়ে পড়া, তাঁদের অভিজ্ঞতা, সংগ্রাম, সাফল্য ও আশা-আকাঙ্ক্ষারইএক বিশেষ প্রতীক হয়ে উঠবে এই ঘটনাটি। বিদেশে বসবাসকারী ভারতীয় সম্প্রদায়েরসদস্যদের সঙ্গে ভারত সরকারের যোগাযোগ ও কর্মপ্রচেষ্টার ক্ষেত্রে এই কেন্দ্রটি যেবিশেষ গুরুত্ব লাভ করতে চলেছে এ বিষয়ে আমি স্থির বিশ্বাসী।

বন্ধুগণ,ভারতীয় বংশোদ্ভূত তরুণ ও যুবকরা যাতে তাঁদের মাতৃভূমি সফর করতে পারেন এবং তাঁদেরভারতীয় শিকড়, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সঙ্গে যোগসূত্র আবিষ্কার করতে পারেন, সেইলক্ষ্যে আমরা সরকারের ‘ভারতকে জানো’ কর্মসূচিটির সম্প্রসারণ ঘটিয়েছি। এর আওতায় এইপ্রথম প্রবাসী ভারতীয় তরুণদের ছ’টি গোষ্ঠী এই বছরটিতে ভারত সফর করছেন।

আমিএকথা জানতে পেরে খুবই আনন্দিত যে এই প্রবাসী ভারতীয় তরুণদের মধ্যে ১৬০ জন আজ এখানেপ্রবাসী ভারতীয় দিবসের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য সমবেত হয়েছেন। প্রবাসী তরুণভারতীয়দের আমি স্বাগত জানাই। আমি আশা করি যে তাঁরা যখন আবার নিজেদের কর্মস্থানে ফিরেযাবেন তখন বিশ্বের যে প্রান্তেই তাঁরা থাকুন না কেন, আমাদের সঙ্গে তাঁদের যোগাযোগেরবন্ধন অটুটই থাকবে। আমি এই আশা পোষণ করি যে তাঁরা আবার ভারত সফর করবেন; আবার এবংবারংবার। গত বছর ‘ভারতকে জানো’ এই প্রথম অনলাইন ক্যুইজ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকরেছিলেন ৫ হাজারেরও বেশি প্রবাসী ও অনাবাসী ভারতীয় তরুণ। এই অনুষ্ঠানের দ্বিতীয়বছরটিতে কমপক্ষে ৫০ হাজার প্রবাসী ভারতীয় তরুণ অংশগ্রহণ করবেন বলে আমি আশা করি।

তরুণবন্ধুরা, এই লক্ষ্য পূরণে আপনারা কি সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেবেন আমার প্রতি? এইমিশনকে সফল করে তুলতে আপনারা কি থাকবেন আমার পাশেই? আমার সঙ্গে একযোগে কাজ করতে কিআগ্রহী আপনারা? তাহলে শুধুমাত্র ৫০ হাজার কেন, আসুন এই সংখ্যাকে আমরা অনেক অনেকগুণ বাড়িয়ে তুলি।

বন্ধুগণ,ভারত বর্তমানে প্রগতির এক নতুন লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছে। এই অগ্রগতি শুধুমাত্র আর্থিকক্ষেত্রেই নয়, ভারতের এই অগ্রগতি সামাজিক, রাজনৈতিক তথা প্রশাসনিক লক্ষ্যেও।আর্থিক ক্ষেত্রে প্রবাসী ও অনাবাসী ভারতীয়দের জন্য প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগেরনিয়মনীতি অনেক উদার করে তোলা হয়েছে। আমার কাছে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের অর্থ হলদুটি। প্রথমটি হল, আক্ষরিক অর্থেই প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ এবং দ্বিতীয়টি হল,‘ফার্স্ট ডেভেলপ ইন্ডিয়া’ অর্থাৎ, প্রথম কাজই হল ভারতের বিকাশ তথা উন্নয়ন। ভারতীয়বংশোদ্ভূত ব্যক্তিদের বিনিয়োগ এবং তাঁদের বিভিন্ন সংস্থা, ট্রাস্ট ও অংশীদারিত্বেরবাণিজ্যিক বিনিয়োগকে এ দেশের ভারতীয় বিনিয়োগকারীদের মতোই সমান গুরুত্ব ও মর্যাদাদেওয়া হয়। ‘স্বচ্ছ ভারত’, ‘মিশন ডিজিটাল ইন্ডিয়া’, ‘স্টার্ট আপ ইন্ডিয়া’র মতো এমনকিছু কিছু কর্মসূচি আমাদের রয়েছে যার সঙ্গে প্রবাসী ভারতীয়রা এ দেশের প্রগতি ওঅগ্রগতির কাজে নিজেদের যুক্ত করতে পারেন। এখানে আপনাদের মধ্যে অনেকেই রয়েছেন যাঁরাবাণিজ্য বা বিনিয়োগের কাজে যুক্ত হতে আগ্রহী। আবার এমন অনেকেই রয়েছেন যাঁরা‘স্বচ্ছ ভারত’ এবং ‘নমামি গঙ্গে’ সহ অন্যান্য কর্মসূচিগুলির সঙ্গে যুক্ত থাকতেস্বচ্ছন্দ্য বোধ করেন।

আবারআপনাদের মধ্যে অনেকেই হয়তো তাঁদের মূল্যবান অবসর সময়টুকু দেশের অবহেলিত মানুষকেসহায়তাদানের জন্য কাজে লাগাতে আগ্রহ বোধ করেন। বিভিন্ন ক্ষেত্রে দক্ষতা বিকাশেরকাজে অবদান সৃষ্টি করতে ইচ্ছা প্রকাশ করেন।

আপনাদেরএই আগ্রহ ও প্রচেষ্টাকে আমরা স্বাগত জানাই। কারণ তার মধ্য দিয়ে প্রবাসী ভারতীয়সম্প্রদায়ের সঙ্গে ভারতের অংশীদারিত্বের সম্পর্ক আরও নিবিড় করে তোলা সম্ভব হবে।প্রবাসী ভারতীয়দের সম্পর্কে আয়োজিত একটি প্রদর্শনী পরিদর্শন করার জন্যও আমিআপনাদের আমন্ত্রণ জানাই। এর মধ্য দিয়ে আমাদের বিশেষ বিশেষ কর্মসূচি এবং তার সঙ্গেনিজেদের যুক্ত করার সুযোগ সম্পর্কে আপনারা অবহিত হতে পারবেন।

বন্ধুগণ,এ দেশে এসে আপনারা শুনে থাকবেন এবং দেখে থাকবেন যে ভ্রষ্টাচার, দুর্নীতি এবং কালোটাকার বিরুদ্ধে আমরা এক বিশেষ অভিযানের সূচনা করেছি। দুর্নীতি ও কালো টাকা দেশ,রাজনীতি, সমাজ তথা প্রশাসনের মধ্যে ধীরে ধীরে দানা বেঁধে উঠেছিল। দুর্ভাগ্যেরবিষয়, কালো টাকার পৃষ্ঠপোষকরা আমাদের এই অভিযানকে বানচাল করে দেওয়ার কাজে উদ্যতহয়ে উঠেছে। কালো টাকা দূর করার লক্ষ্যে ভারত সরকারের এই অভিযানকে প্রবাসী ভারতীয়রাযেভাবে সমর্থন ও অভিনন্দন জানিয়ে এসেছেন সেজন্য আমি তাঁদের সাধুবাদ ও ধন্যবাদজানাই।

বন্ধুগণ,পরিশেষে আমি এ কথাই বলতে চাই যে ভারতীয় হিসেবে আমরা সকলেই এক সমান ঐতিহ্যেরঅংশীদার। এই সম্পর্ক আমাদের পরস্পরকে আরও কাছে নিয়ে এসেছে। আমরা কে কোথায় রয়েছিসেটা বড় কথা নয়। বিশ্বের যে প্রান্তেই আমরা থাকি না কেন, একটি সাধারণ আত্মিকবন্ধনে আমরা যুক্ত রয়েছি পরস্পরের সঙ্গে।

আপনাদেরসকলকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। জয় হিন্দ!