When the entire country stands with our forces, the strength of our jawans increases 125 crore times: PM Modi during #MannKiBaat
Decision to implement demonetisation wasn’t easy. There will be inconvenience to rid the country of troubles of 70 years: PM #MannKiBaat
Govt, post offices, banks are working hard & with dedication to fight evils of black money & corruption: PM Modi during #MannKiBaat
Despite inconvenience, people across the country have accepted demonetisation drive. This shows their potential: PM during #MannKiBaat
Villages, farmers & small traders have a pivotal role in our country’s economy: PM Modi during #MannKiBaat
Urge small traders to embrace technology by using banking apps & digital payment systems: PM Modi during #MannKiBaat
By embracing technology, we can build a cashless society. This will be a big transformation: PM during #MannKiBaat
We can gradually move from a ‘less-cash’ society to a cashless society. Youth can play a major role in this: PM Modi during #MannKiBaat
Youth can be the agents of change in fighting black money & corruption: PM Narendra Modi during #MannKiBaat

আমার প্রিয় দেশবাসী, নমস্কার!

গত মাসে আমরা সবাই দীপাবলির উৎসবপালন করেছি। প্রত্যেক বছরের মতো এবারও দীপাবলির সময়, সেনাবাহিনীর সঙ্গে দীপাবলিপালন করতে আমি চীন সীমান্তে গিয়েছিলাম।

আই-টি-বি-পি’র জওয়ানদের সঙ্গে হিমালয়ের উঁচু এলাকায় দীপাবলি উৎসব পালন করেছি।প্রতি বছরই আমি সীমান্তে যাই, কিন্তু এবারেরদীপাবলির অভিজ্ঞতা একেবারেই আলাদা। ১২৫ কোটি ভারতবাসী যে অতুলনীয় আবেগে এই দীপাবলিকেসেনাবাহিনীর জওয়ানদের সমর্পণ করেছেন – সেনানীদের উৎসর্গ করেছেন এবারে, সেই আবেগেরউপলব্ধি জোয়ানদের চেহারায় প্রতিফলিত হচ্ছিল। সেই আবেগে ওঁরা ভরপুর ছিলেন এবং শুধুতাই নয়, দেশবাসী যে শুভেচ্ছাবার্তা পাঠিয়েছেন, নিজেদের খুশির সঙ্গে সেনানীদেরসামিল করেছেন তার এক অদ্ভূত প্রতিক্রিয়া দেখছিলাম। শুধু যে শুভেচ্ছাবার্তাপাঠিয়েছেন এমন নয়, সমস্ত আবেগ দিয়ে কেউ কবিতা পাঠিয়েছেন, কেউ ছবি এঁকে পাঠিয়েছেন,কেউ কার্টুন, কেউ বা ভিডিও – এমন কতো কী, মনে হচ্ছিল – কী করে যেন প্রত্যেক ঘরেঘরে একটা সেনা চৌকি রয়েছে। যখন আমি এইগুলো দেখছিলাম, কী অপূর্ব সব কল্পনায় সে সববানানো, ভেবে অবাক হয়ে গেছি। এই সব বিচিত্র শুভেচ্ছাবার্তা থেকে বাছাই করে একটা‘কফি টেবিল বুক’ করা হবে বলে ‘মাই-গভ’ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেই বইয়ের কাজ চলছে,আপনাদের সকলের সহযোগিতায়, দেশের সেনাবাহিনীর জওয়ানদের প্রতি আপনাদের আবেগময় বৈচিত্র্যপূর্ণসৃষ্টি, জওয়ানদের সঙ্গে আপনাদের যে ভাব বিনিময়ের জগৎ, সব একটা বইতে সংকলিত করাহবে।

সেনাবাহিনীরএক জওয়ান লিখেছেন –

“প্রধানমন্ত্রীজী, আমাদের মতো জওয়ানরা হোলি, দেওয়ালি সবউৎসবে সীমান্তেই থাকি এবং প্রতিটি মুহূর্ত আমরা দেশের সুরক্ষার চিন্তায় আশঙ্কিতথাকি। তারপরেও উৎসবের সময়গুলোয় বাড়ির কথা মনে পড়ে। কিন্তু, সত্যি বলতে কি এবারেদীপাবলি উৎসবের সময় আমাদের তেমনটা মনে হয় নি। উল্টে এবারে মনে হচ্ছিল, ১২৫ কোটিভারতবাসীর সঙ্গেই যেন দীপাবলির উৎসবে সামিল হয়েছি।

প্রিয়দেশবাসী, যে আন্তরিকতা, খুশী, ভালোবাসা ও আনন্দ আমাদের সেনাবাহিনীর জওয়ানদের মধ্যেসঞ্চারিত হয়েছে, একি শুধু হোলি-দীপাবলিতেই সীমাবদ্ধ থাকবে, না থাকা উচিৎ? আপনাদেরকাছে আমার আবেদন, আসুন, সমাজ হিসেবে, রাষ্ট্র হিসেবে একে স্বভাব ও প্রকৃতির অংশকরে তুলি। যে কোনও পার্বণ বা উৎসবই হোক, যে কোনও আনন্দের সময় আমরা আমাদেরসেনাবাহিনীর জওয়ানদের কোনও না কোনও ভাবে মনে রাখবো। যখন রাষ্ট্র সেনাবাহিনীর সঙ্গেএকাত্ম হয়ে উঠবে, সেনাবাহিনীর শক্তিও ১২৫ কোটি গুণ বেড়ে যাবে।

কিছুদিন আগে,জম্মু ও কাশ্মীরের সব গ্রামের প্রধানরা আমার সঙ্গে দেখা করেছিলেন। ওঁরাজম্মু-কাশ্মীর পঞ্চায়েত সম্মেলনে যোগ দিতে এসেছিলেন। কাশ্মীর উপত্যকার বিভিন্নগ্রাম থেকে প্রায় ৪০-৫০ জন প্রধান এসেছিলেন। অনেকক্ষণ ধরে কথাবার্তার সুযোগহয়েছিল। ওঁরা গ্রামের বিকাশ ও উন্নয়নের জন্য কিছু দাবিদাওয়া জানাতে এলেও স্বাভাবিকভাবেই আলোচনায় কাশ্মীর উপত্যকার সাম্প্রতিক অবস্থা, আইন-কানুন, বাচ্চাদের ভবিষ্যৎ- এই সব প্রসঙ্গও উঠে এলো। এত আন্তরিক ভাবে খোলা মনে ওঁরা সেসব কথা বলছিলেন, আমিঅভিভূত হয়ে পড়েছিলাম। কথায় কথায় বাচ্চাদের স্কুলবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার প্রসঙ্গ উঠল।আমি দেখলাম দেশের বাকি জনগণের মতোই ওঁরা অত্যন্ত কষ্ট পাচ্ছেন এবং তাঁরা মনে করেনবাচ্চাদের স্কুলবাড়ি পোড়ানো মানে বাচ্চাদের আগামী সম্ভাবনা জ্বালিয়ে শেষ করে ফেলা।

আমি ওইগ্রামপ্রধানদের নিজেদের এলাকায় ফিরে বাচ্চাদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করতে কী করা যায়তা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করতে অনুরোধ করেছি। আজ আমার বলতে ভালো লাগছে যে, কাশ্মীরউপত্যকার বিভিন্ন গ্রামের যে প্রধানেরা এসেছিলেন, আমায় যেমন কথা দিয়েছিলেন, ফিরেগিয়ে তাঁরা আমার অনুরোধ মতো গ্রামের মানুষদের উৎসাহিত করতে শুরু করেছেন,প্রত্যেকটি পরামর্শ মেনে চলছেন। কিছুদিন আগে কাশ্মীরে বোর্ড এক্‌জাম হয়ে গেল এবংসেখানকার প্রায় ৯৫% ছাত্র-ছাত্রী পরীক্ষায় বসেছেন। বোর্ডের পরীক্ষায় এই বিপুলসংখ্যায় ছাত্র-ছাত্রীর অংশগ্রহণে আমি স্পষ্ট আভাস পাচ্ছি যে জম্মু-কাশ্মীরউপত্যকায় আমাদের বাচ্চারা শিক্ষার মাধ্যমে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের বিকাশের জন্যদৃঢ়প্রতিজ্ঞ। ছাত্র-ছাত্রীদের এই অঙ্গীকারের জন্য শুধু ওদের নয়, ওদের অভিভাবক,বাবা-মা, শিক্ষক এবং সর্বোপরি গ্রামপ্রধানদের অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

আমার প্রিয়ভাই-বোনেরা, যখন আমি এবারের ‘মন কি বাত’ নিয়ে জনসাধারণের আলোচনা প্রস্তাব চেয়েছি,আমি স্বীকার করছি, প্রত্যেকে একটাই প্রস্তাব করেছেন। প্রত্যেকেই চেয়েছেন পাঁচশো ওহাজার টাকার নোট নিয়ে আমি বিস্তারিত ভাবে কিছু বলি। ৮-ই নভেম্বর রাত ৮-টায় আমিদেশের সঠিক উন্নয়নের জন্য, রাষ্ট্রের পক্ষে এক মহা অভিযানের কথা জানিয়েছিলাম। যেসময় আমি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম এবং আপনাদের সেই সিদ্ধান্ত জানিয়েছিলাম, স্পষ্টবলেছিলাম, এটা একটা সাধারণ সিদ্ধান্ত নয়, এটা একটা কঠিন পদক্ষেপ। এই সিদ্ধান্তনেওয়াটা যেমন অত্যন্ত কঠিন ছিল, তা প্রয়োগ ও বাস্তবায়িত করা আরও কঠিন। এটাও আমিজানতাম, এই সিদ্ধান্তের জন্য জনসাধারণকে নতুন নতুন পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হবে।সিদ্ধান্ত ঘোষণার সময়ই আমি সতর্ক করেছিলাম এই প্রস্তাব কার্যকরী করার প্রভাব এতটাইব্যাপক যে তার থেকে বেরোতে অন্ততঃ ৫০ দিন তো লাগবেই। তারপরই আমরা স্বাভাবিকঅবস্থার দিকে এগোতে পারবো। সত্তরটা বছর ধরে যে অসুখ ছড়িয়েছে, তার থেকে সুস্থ হয়েওঠা খুব সহজ ঘটনা নয়। আপনাদের কষ্টের কথা আমি ভালো ভাবেই উপলব্ধি করতে পারছি। আপনাদেরবিভ্রান্ত ও বিচলিত করতে ক্রমাগত যে প্রচেষ্টা চলেছে, তার পরেও এই পথই যে দেশেরকল্যাণসাধনের পক্ষে সঠিক, তা আপনারা বুঝতে পারছেন। আমি আপনাদের বিপুল সমর্থন ওসহযোগিতা পাচ্ছি। আমি দেখছি, সারা বিশ্ব দেখছে, নানান অর্থনীতিবিদ্‌ এই বিশাল দেশেবিভিন্ন কারেন্সি, কালো টাকা, জাল নোট এই সব কিছু নিয়ে চর্চা করে চলেছে। বিশ্বেরমানুষ কৌতূহলী যে ১২৫ কোটি ভারতবাসী এমন কঠিন পরিস্থিতি সামলে উঠতে পারে কিনা। এমনসংশয় তো হতেই পারে। ১২৫ কোটি ভারতবাসীর নিজের দেশের প্রতি অগাধ শ্রদ্ধা ও পূর্ণ বিশ্বাসআছে যে তাঁরা দেশের উন্নতির জন্য সর্বান্তঃকরণে অঙ্গীকারবদ্ধ। আমাদের দেশ পুড়েখাঁটি সোনায় পরিণত হবে এদেশের নাগরিকদের জন্য। এর কারণ আপনারাই, এই সাফল্যেরযাত্রাপথ আপনারাই তৈরি করেছেন।

সারা দেশের কেন্দ্রসরকার, রাজ্য সরকার, স্বশাসিত সংস্থা, ১ লাখ ৩০ হাজার ব্যাঙ্কের শাখা, লক্ষ লক্ষব্যাঙ্ক কর্মচারি, দেড় লক্ষেরও বেশি ডাকঘর, এক লক্ষেরও বেশি ব্যাঙ্ক-সহযোগীরাত-দিন এই ব্যবস্থায় কাজ করে চলেছেন, এই কাজে নিজেদের উৎসর্গ করেছেন। বিচিত্র সবহট্টগোলের মাঝে এই সমস্ত কর্মীরা ধৈর্যের সঙ্গে দেশসেবার এক মহান কর্মযজ্ঞ মেনেনিয়ে এক অভূতপূর্ব পরিবর্তনের কাজে মগ্ন রয়েছেন। সকালে কাজ শুরু করে কখন যে রাতহয়ে যাচ্ছে, তাঁরা খেয়ালও করতে পারছেন না, কাজ করে চলেছে। এই জন্যই আমরা সাফল্যপাবোই। ব্যাঙ্ক ও ডাকঘরের কর্মীরা কি প্রতিকূলতার মধ্যে কাজ করে চলেছেন। আর যখনমানবিকতার কথা আসছে ওঁরা যেন আরও সক্রিয় হয়ে উঠছেন। আমি শুনলাম খাণ্ডোয়ার একপ্রবীণ মানুষ অ্যাক্সিডেন্টে আহত হওয়ায় তাঁর টাকার আচমকা প্রয়োজন হয়। সেই কথা যখনস্থানীয় ব্যাঙ্ক কর্মচারীদের কানে গেছে তাঁরা সঙ্গে সঙ্গে প্রবীণ ভদ্রলোকের বাড়িতেটাকা পৌঁছে দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, তাঁর চিকিৎসার সুব্যবস্থা করেছেন। আমি এই ঘটনাটিজেনে অভিভূত হয়েছি। এমন কতো ঘটনা সংবাদপত্রে, টিভিতে, অন্যান্য মিডিয়াতে ছড়িয়েপড়েছে। প্রতিকূলতার মুখোমুখি হলেই আপনার শক্তির আসল পরিচয় পাওয়া যায়।প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে জন-ধন যোজনা অভিযান যখন চালু হয়, সেই সময় ব্যাঙ্ককর্মচারীরা কি শ্রম ও আত্মত্যাগ করেছেন, আমি দেখেছি। ওঁদের সামর্থের পরিচয় পেয়েছি।৭০ বছরে যে কাজ অসম্ভব বলে মনে হয়েছিল, ওঁরা তা সম্ভব করে দেখিয়েছেন। আজ আবার সেইকঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছি এবং আমি বিশ্বাস করি ১২৫ কোটি দেশবাসীর সংকল্প,তাঁদের পুরুষকার, এই দেশ – এই রাষ্ট্রকে নতুন শক্তিতে বলীয়ান করে তুলবেই।

কিন্তুদুর্নীতি এমনই শিকড় গেড়েছে, যে কিছু মানুষের দুর্নীতির অভ্যাস যাচ্ছে না। অনেকেইএখনও মনে করছেন দুর্নীতির টাকা, কালো টাকা, হিসাব-বহির্ভূত টাকা চালু রাখার কোনওনা কোনও উপায় বের করে নেবেন। ওঁরা নিজেদের কালো টাকা বাঁচাতে বিভিন্ন

বে-আইনী উপায় নিচ্ছেন। আমার বেশি খারাপ লাগছে যখন দেখছি, ওঁরা নিজেদের অসৎ কাজেরউপায় বের করতে সাধারণ গরীব মানুষদের জড়াচ্ছেন। গরীবদের বোকা বানিয়ে তাঁদেরপ্রলুব্ধ করে, তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকিয়ে, তাঁদের নানান দুর্নীতিরসঙ্গী করে নিজেদের টাকা বাঁচাচ্ছেন। এই ধরনের অসৎ লোকজনদের আমি শুধু একটা কথাইবলতে পারি, নিজেদের শোধরাবেন কিনা আপনাদের ব্যাপার, আইন মেনে না চললে আইন তার যাব্যবস্থা নেওয়ার নেবে। একটাই অনুরোধ, নিজেদের অন্যায্য স্বার্থ পূরণের জন্য গরীবমানুষগুলিকে নিয়ে খেলবেন না। আপনাদের অন্যায় উপার্জন গরীব মানুষের রেকর্ডে জুড়েদিচ্ছেন, তদন্তের পর আপনি নয়, এই গরীব মানুষগুলো ফেঁসে যাবে, ওরা কষ্ট ভোগ করবে। বেনামীসম্পত্তিকে আওতায় আনার জন্য অত্যন্ত কঠোর নিয়মকানুন বানানো হয়েছে, যেগুলি সবক্ষেত্রে বাস্তবায়িত করা হচ্ছে। কারণ সরকার চায় না যে সাধারণ দেশবাসী কোনও রকমঅসুবিধার সম্মুখীন হোক।

পাঁচশো ওহাজার টাকার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া কালো টাকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে যে লড়াই আমরা শুরুকরেছি, তাকে সমর্থন জানিয়ে মধ্যপ্রদেশ থেকে শ্রীমান আশীষ আমাকে টেলিফোন করেন –

“স্যার নমস্কার, আমার নাম আশীষ পারে। আমি মধ্যপ্রদেশের জেলাহরদা, তহশীল ও গ্রাম তিরালির এক সাধারণ নাগরিক। আপনার এই পাঁচশো-হাজারের নোট বন্ধকরার পদক্ষেপ অত্যন্ত প্রশংসনীয়। আমার অনুরোধ, ‘মন কি বাত’-এর মাধ্যমে এমন কয়েকটিউদাহরণ দিন যেখানে সাধারণ মানুষ বহু অসুবিধার সম্মুখীন হয়েও রাষ্ট্রের উন্নতিরজন্য আপনার এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে। এতে লোকের উৎসাহ বৃদ্ধি পাবে। রাষ্ট্রনির্মাণের জন্য ‘ক্যাশ লেস’ প্রণালী খুবই জরুরি বলে আমি মনে করি। আমি সমগ্রদেশবাসীর সঙ্গে আছি এবং অত্যন্ত আনন্দিত যে আপনি পাঁচশো-হাজার টাকার নোট বন্ধ করারমতো পদক্ষেপ নিয়েছেন।’

ঠিক এরকমই আরএকটি ফোন আমি পাই কর্ণাটকের শ্রীমান য়েলপ্পা ওয়েলাঙ্কারের কাছ থেকে।

“মোদীজী নমস্কার, আমি কর্ণাটকের কোপ্পল জেলার একটি গ্রামথেকে য়েলপ্পা ওয়েলাঙ্কার বলছি। আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ। আপনি বলেছিলেন যে সুদিন আসছে,কিন্তু কেউ ভাবতে পারেনি যে আপনি এত বড় একটি পদক্ষেপ নিতে পারবেন। পাঁচশো ও হাজারটাকার নোট বন্ধ করে আপনি দুর্নীতিগ্রস্ত কালোবাজারিদের উচিত শিক্ষা দিয়েছেন।ভারতের প্রত্যেক নাগরিকের কাছে এর চেয়ে বড় সুদিন আর হয় না। এই জন্য আমি আপনাকে আরওএকবার ধন্যবাদ জানাই।”

মিডিয়া,সাধারণ মানুষ ও সরকারী সূত্রের মাধ্যমে যখন এই ধরনের খবর শুনতে পাই, তখন কাজ করারউৎসাহ অনেক বেড়ে যায়। অত্যন্ত আনন্দ ও গর্ব হয় এই ভেবে যে দেশের সাধারণ মানুষের কীঅদ্ভূত সামর্থ! মহারাষ্ট্রের আকোলায় ন্যাশনাল হাইওয়ে সিক্স-এ একটি রেস্তোরাঁ আছে। ওঁরারেস্তোরাঁর সামনে একটি বড় বোর্ড লাগিয়েছেন, যাতে লেখা – যদি আপনার পকেটে পুরনোপাঁচশো-হাজারের নোট থাকে এবং আপনি খেতে চান, তাহলে আপনি টাকার চিন্তা করবেন না এবংঅভুক্ত যাবেন না। পেট পুরে খেয়ে যান ও আবার যখন এই রাস্তা দিয়ে যাবেন, তখন পয়সামিটিয়ে যাবেন। লোকেরা সেখানে গিয়ে খেয়েছেন, আর দুই-চার-ছয়দিন বাদে আবার যখন সেইরাস্তা দিয়ে ফিরেছেন তখন বিল মিটিয়ে দিয়েছেন। এই হচ্ছে আমার দেশের শক্তি, যেখানেসেবা পরায়ণতা ও ত্যাগ ধর্মই প্রধান।

আমিনির্বাচনের সময় যে চা-বৈঠক করতাম সেই খবর সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছিল। বিশ্বেরঅনেক দেশ চা-বৈঠক শব্দটির প্রয়োগও শিখে গিয়েছিল। কিন্তু আমার এটা জানা ছিল না যেবিয়েতেও ‘চা-বৈঠক’ হতে পারে! আমি খবর পাই সতেরোই নভেম্বর সুরাতে এমনই এক বিয়ে হয়।এই বিয়েতে পাত্রীপক্ষ আমন্ত্রিতদের জন্য শুধুমাত্র চা পানের আয়োজন করেছিলেন, অন্যকোনও খাওয়াদাওয়া ও ভুরিভোজের অনুষ্ঠান ছিল না – কারণ, নোট বন্ধ হওয়ার দরুণ তাঁদেরহাতে নগদ টাকার অভাব ছিল। বরযাত্রীরাও এই ব্যাপারটিকে সমর্থন করেন। এই ধরনের বিয়েরমাধ্যমে সুরাতের ভরত মারু ও দক্ষা পরমার দুর্নীতি ও কালো টাকার বিরুদ্ধে লড়াইয়েঅংশগ্রহণ করে এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। নববিবাহিত দম্পতিকে জানাই আমার অনেকঅনেক আশীর্বাদ। বিয়ের মতো অনুষ্ঠানকেও এই মহান যজ্ঞে সামিল করার জন্য আমি তাদেরঅসংখ্য অভিনন্দন জানাচ্ছি। যখন সঙ্কট আসে, তখনই মানুষ নতুন নতুন পথ খুঁজে নেয়।

একবার টিভি-রখবরে আসামের ঢেকিয়াজুলি গ্রামের একটি ঘটনা আমার চোখে পড়ে। গ্রামটি চা-শ্রমিকদেরএবং এই চা-শ্রমিকরা সাপ্তাহিক মজুরি পেয়ে থাকে। এবারে যখন দু-হাজার টাকার নোটদেওয়া হয়, তখন তাঁরা কী করলেন? প্রতিবেশী চারজন মহিলা একজোট হয়ে এক সঙ্গে কেনাকাটাকরলেন এবং দু-হাজার টাকার নোটে পেমেন্ট করলেন। তাঁদের কোনও ছোটো কারেন্সির দরকারইপড়ল না। তাঁরা এটাও ঠিক করলেন পরের সপ্তাহে এর হিসাব মিলিয়ে নেবেন। লোকেরা এভাবেইনতুন নতুন উপায় বের করে নিচ্ছে। আর এর ফলও চোখে পড়ছে। সরকারের কাছে খবর আসে যেআসামের চা বাগানের শ্রমিকরা এ-টি-এম পরিষেবার দাবি জানাচ্ছেন। দেখুন, কীভাবেগ্রাম্য জীবনেও পরিবর্তন আসছে। এই অভিযানের সুফল দেশ পরবর্তী সময়ে পাবে, কিন্তুকিছু মানুষ এখনই লাভবান হয়ে গেছেন। যদি জিজ্ঞেস করেন কী হয়েছে তো আমি বলবো ছোটোছোটো শহর থেকে আমরা কিছু কিছু খবর পাচ্ছি। প্রায় চল্লিশ-পঞ্চাশটা শহর থেকে আমরাখবর পেয়েছি যে যাঁরা এতদিন কর ফাঁকি দিতে অভ্যস্ত ছিলেন, যে কোনও ধরনের ট্যাক্স –যেমন, জলকর, বিদ্যুতের বিল, প্রভৃতি – তাঁরা এখন তড়িঘড়ি পুরনো নোটে সমস্ত বকেয়ামিটিয়ে দিচ্ছেন। আপনারা ভালোভাবেই জানেন যে গরীব মানুষ দুদিন আগে হলেও ন্যূণতমবকেয়াও জমা দিয়ে দেন। কিন্তু ধনী, ক্ষমতাবান লোকেরা, যাঁরা জানেন, তাঁদের কখনও এইব্যাপারে প্রশ্ন করা হবে না, তাঁরাই এর ফায়দা উঠিয়ে থাকেন। আর এই জন্যই বাকিরপরিমাণ বাড়তে থাকে। প্রত্যেক মিউনিসিপ্যালিটির ট্যাক্সের কেবল মাত্র পঞ্চাশ শতাংশইজমা পড়ে। কিন্তু আট তারিখের এই ঘোষণার পরে মানুষজনের মধ্যে পুরনো নোটে বকেয়া জমাদেওয়ার হিড়িক পড়ে যায়। সাতচল্লিশটি শহরের হিসেব নিয়ে দেখা গেছে, গত বছর এই সময়েযেখানে তিন-সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা কর হিসেবে জমা পড়েছিল, আপনারা জেনে আশ্চর্যএবং আনন্দিত হবেন যে সেখানে এক সপ্তাহে তেরো হাজার কোটি টাকা জমা পড়েছে! কোথায় তিন– সাড়ে তিন হাজার, আর কোথায় তেরো হাজার! তাও স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে! এখন সেই সবমিউনিসিপ্যালিটির কাছে চার গুণ পয়সা জমা পড়েছে, যা স্বাভাবিক ভাবে গরীব বস্তিরনিকাশী ব্যবস্থায়, পানীয় জলের ব্যবস্থায় ও অঙ্গণওয়ারির জন্য খরচ করা হবে। এরকম বহুউদাহরণ আমরা পাচ্ছি, যার প্রত্যক্ষ সুফল আমাদের নজরে আসছে।

ভাই-বোনেরা,গ্রাম ও চাষিভাইরা আমাদের দেশের অর্থব্যবস্থার মেরুদণ্ড স্বরূপ। অর্থব্যবস্থার এইপরিবর্তনের ফলে নানান সমস্যার সম্মুখীন হয়েও যখন আমরা, প্রত্যেক নাগরিক অ্যাডজাস্টকরছি, তখন আমি দেশের চাষিভাইদের বিশেষ ভাবে অভিনন্দন জানাতে চাই। আমি এই বছরেরফসলের বীজ বপনের হিসাব নিচ্ছিলাম। নভেম্বরের কুড়ি তারিখ পর্যন্ত হিসাব আমার কাছেআছে। আমি দেখে খুব খুশি হলাম যে গম, ডাল বা তিল সবক্ষেত্রেই গতবছরের তুলনায় এবছরেরবীজ বপণের অঙ্কটা বেড়েছে। সমস্ত প্রতিকূলতার মধ্যেও চাষিভাইরা নতুন নতুন পথ বেরকরে নিয়েছেন। সরকারী তরফ থেকেও কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যেখানেচাষিভাইদের এবং গ্রামগুলিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। তারপরও কিছু সমস্যা রয়েছেকিন্তু আমি বিশ্বাস করি যে, চাষিভাইরা সবসময় প্রতিকূলতাকে দৃঢ়ভাবে মোকাবিলাকরেছেন, তা প্রাকৃতিক দুর্যোগ হোক বা অন্য কিছু। এই সময়েও তাঁরা পিছুপা হবেন না।

আমাদের দেশেরছোটো ব্যবসায়ীরা রোজগারের সুযোগও তৈরি করেন এবং আর্থিক উন্নয়নেও যোগদান করেন।তাঁদের জন্য গতবছর বাজেটে আমি একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। সিদ্ধান্তটিহল, শহরের বড় বড় Mall -এর মত গ্রামের ছোটো দোকানিরাও চব্বিশ ঘণ্টাই ব্যবসা করতেপারবেন। কোনও আইন তাঁদের আটকাবে না। আমার মনে হয়েছিল, বড় বড় Mall যদি চব্বিশ ঘণ্টাখোলা থাকতে পারে, তাহলে গ্রামের গরীব দোকানদাররা সেই সুযোগ কেন পাবেন না? ‘মুদ্রা’যোজনার মাধ্যমে তাঁদের লোন পাইয়ে দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত উদ্যম নেওয়া হয়েছে।লক্ষ-কোটি টাকা ‘মুদ্রা’ যোজনার মাধ্যমে এই সমস্ত ছোটো ব্যবসায়ীদের দেওয়া হয়েছে।কারণ অসংখ্য মানুষ যাঁরা এই ছোটো ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত, তাঁরাই কোটি কোটি টাকারবাণিজ্যিক লেনদেনকে চালু রাখেন। কিন্তু এই সিদ্ধান্তের ফলে এই সমস্ত ছোটোব্যবসায়ীদেরও অসুবিধা হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু আমি দেখলাম, এঁরা প্রযুক্তি, মোবাইলঅ্যাপ, মোবাইল ব্যাঙ্ক, ক্রেডিট কার্ড ইত্যাদির মাধ্যমে গ্রাহকদের পরিষেবাদিচ্ছেন। কিছু ক্ষেত্রে বিশ্বাসকেও মূলধন করে কাজ চালানো হচ্ছে। আমি সমস্ত ক্ষুদ্রব্যবসায়ী ভাই-বোনদের বলতে চাই, এই সুযোগে আপনারাও ডিজিট্যাল জগতে সঙ্গে যুক্ত হন।আপনারাও নিজেদের মোবাইল ফোনে ব্যাঙ্ক-এর অ্যাপ ডাউনলোড করুন। ক্রেডিট কার্ডের জন্য POS Machine -এর ব্যবস্থা রাখুনএবং বিনা নোটে কীভাবে ব্যবসা করা যায়, তা শিখে নিন। আপনারা দেখেছেন, বড় বড় Mall- গুলি টেকনোলজিরমাধ্যমে ব্যবসা চালিয়ে থাকে। ঠিক সেইভাবে একজন ছোটো ব্যবসায়ীও সামান্য ‘ইউজারফ্রেইণ্ডলি’ টেকনোলজির সাহায্যে কারবারের লেনদেন করতে পারেন। এক্ষেত্রে কোনওলোকসানের সম্ভাবনা তো নেই-ই, প্রসারের সুযোগ আছে। আমি আপনাদের অনুরোধ জানাই,‘ক্যাশলেস সোসাইটি’ তৈরিতে আপনারাও যোগদান করুন। আপনারা বাণিজ্যিক প্রসারের জন্যমোবাইল ফোনেই সম্পূর্ণ ব্যাঙ্কিং-এর সুবিধা নিতে পারেন এবং নগদ নোটের লেনদেন ছাড়াইব্যবসা চালু রাখতে পারেন। এগুলি প্রযুক্তিগত উপায়, যা নিরাপদ, সুরক্ষিত এবং দ্রুত।আমি চাই আপনারা এই অভিযানকে সফল করতে শুধুমাত্র সাহায্য করুন তাই নয়, আপনারানেতৃত্বও দিন। আমার বিশ্বাস আপনারাই পারেন এই পরিবর্তনে নেতৃত্ব দিতে। আপনারাগ্রামের সমস্ত ব্যবসায়িক লেনদেন প্রযুক্তির মাধ্যমে সম্পন্ন করতে পারবেন বলেই আমারবিশ্বাস। আমি শ্রমিক ভাই-বোনদেরও বলতে চাই যে, আপনাদের উপর অনেক শোষণ চালানোহয়েছে। কাগজে লেখা হচ্ছে এক বেতন আর হাতে যা দেওয়া হচ্ছে তা আরেক রকম। কখনও পুরোপারিশ্রমিক পাওয়া গেল তো দেখা গেল বাইরে একজন দাঁড়িয়ে আছে, তাকে ভাগ দিতে হবে আরশ্রমিক বাধ্য হয়ে এই শোষণকে জীবনের অঙ্গ বলে মেনে নেয়। এখনকার নতুন ব্যবস্থায় আমরাচাই যে ব্যাঙ্কে আপনার অ্যাকাউন্ট থাকুক, আপনার পারিশ্রমিকের অর্থ ব্যাঙ্কে জমাহোক্‌ যাতে ন্যূণতম মজুরির শর্ত পালিত হয়। আপনি যেন পুরো অর্থ পান, কেউ কেটে না নেয়।আপনার উপর যেন শোষণ না হয়। আর একবার আপনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউণ্টে টাকা এসে গেলে আপনিআপনার ছোট মোবাইলে – কোনও বড় স্মার্ট ফোন দরকার নেই – আজকাল তো আপনার মোবাইল ফোনইমানিব্যাগের কাজ করে – সেই মোবাইল ফোন দিয়ে আশপাশের ছোটখাটো দোকানে যা কেনার কিনতেপারেন, ওটা থেকে পয়সা মিটিয়ে দিতে পারেন। এই জন্য আমি শ্রমিক ভাই-বোনদের এই যোজনারঅংশীদার হতে বিশেষ অনুরোধ জানাই কারণ প্রকৃত অর্থে আমি এই সিদ্ধান্ত দেশের গরীবদেরজন্য, শ্রমিকদের জন্য, বঞ্চিতদের জন্য, পীড়িতদের জন্য নিয়েছি। এর লাভ ওঁদের পাওয়াউচিত।

আজ আমি বিশেষভাবে যুবক বন্ধুদেরসঙ্গে কথা বলতে চাই। আমরা গোটা দুনিয়ায়

ঢাক-ঢোল পিটিয়ে বলি যে – ভারত এমন দেশ যেখানে জনসংখ্যার ৬৫ শতাংশ পঁয়ত্রিশ বছরেরকম বয়সী। আপনারা, আমার দেশের যুবক ও যুবতীরা, আমি জানি আমার সিদ্ধান্ত আপনাদেরপছন্দ হয়েছে। আমি এটাও জানি যে আপনারা এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেন। আমি এও জানি যেএই ব্যাপারটাকে সদর্থকভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে আপনারা অনেক অবদানও রাখবেন। কিন্তুবন্ধুরা, আপনারা আমার সত্যিকারের সৈন্য, সত্যিকারের বন্ধু। ভারত মায়ের সেবার করারএক অদ্ভূত সুযোগ এসেছে আমাদের সামনে। দেশকে আর্থিক সমৃদ্ধির শীর্ষে নিয়ে যাওয়ারসুযোগ এসেছে। আমার বাহাদুর তরুণরা, আপনারা কি আমাকে সাহায্য করতে পারেন? শুধু আমারসঙ্গে থাকবেন, এইটুকুতে কাজ হবে না। আজকের দুনিয়া সম্পর্কে যে ধারণা আছে আপনাদের,তা পুরনো প্রজন্মের নেই। এমন হতে পারে যে আপনাদের পরিবারে বড় ভাইও এতটা জানে না আরমা-বাবা, কাকা-কাকিমা, মামা-মামীও সম্ভবতঃ এতটা জানেন না। আপনারা জানেন ‘অ্যাপ’ কীজিনিস, ‘অনলাইন ব্যাঙ্কিং’ কী, ‘অনলাইন টিকিট’ বুকিং কীভাবে হয়। আপনাদের জন্য এসবখুব সাধারণ ব্যাপার এবং আপনারা এর ব্যবহারও করেন। কিন্তু আজ দেশ যে মহান কাজটাকরতে চায়, আমাদের সেই স্বপ্ন হল ‘ক্যাশলেস সোসাইটি’। এটা ঠিক যে একশো শতাংশক্যাশলেস সোসাইটি সম্ভব নয়। কিন্তু একবার যদি আমরা ‘লেস-ক্যাশ সোসাইটি’-র সূত্রপাতকরতে পারি, তবে ‘ক্যাশলেস সোসাইটি’-র লক্ষ্য অধরা থাকবে না। আর এই ব্যাপারেআপনাদের সক্রিয় সহযোগিতা, সময় ও সংকল্প চাই। আর আপনারা আমাকে কখনও নিরাশ করবেন নাতা আমি জানি, কারণ আমরা সবাই হিন্দুস্থানের গরীব মানুষদের জীবন পরিবর্তনের ইচ্ছাপোষণ করা নাগরিক। আপনারা জানেন, ‘ক্যাশলেস সোসাইটি’র জন্য, ডিজিট্যাল ব্যাঙ্কিং-এরজন্য বা মোবাইল ব্যাঙ্কিং-এর জন্য আজ কত সুযোগ রয়েছে। প্রত্যেকটা ব্যাঙ্ক অনলাইনসুবিধা দেয়। হিন্দুস্থানে প্রতিটি ব্যাঙ্কের নিজস্ব মোবাইল অ্যাপ আছে। প্রতিটি ব্যাঙ্কেরনিজস্ব ওয়ালেট আছে। ওয়ালেটের সাদামাটা অর্থ হল – ‘ই’-মানিব্যাগ। বেশ কয়েকরকম কার্ডপাওয়া যায়। জন-ধন যোজনার অধীনে ভারতের কোটি কোটি গরীব পরিবারের কাছে Rup a y Card আছে, যে Rupay Card খুব কম ব্যবহৃত হত।আট তারিখের পর থেকে তার বহুল ব্যবহার করছেন গরীব মানুষেরা এবং তাতে প্রায় তিনশোশতাংশ বৃদ্ধি ঘটেছে। মোবাইল ফোনে যেমন প্রি-পেইড কার্ড পাওয়া যায়, তেমনই ব্যাঙ্কেওপয়সা খরচের জন্য কার্ড পাওয়া যায়। এ এক বড় প্ল্যাটফর্ম, ব্যবসা-বাণিজ্যের‘বিশ্বজনীন মূল্য সূচক’ ( UPI ), যা দিয়ে আপনি কেনাকাটাও করতে পারেন, অর্থও পাঠাতে পারেন,অর্থ গ্রহণও করতে পারেন। আর এই কাজটা এতটাই সরল যেমনটা আপনার হোয়াট্‌স অ্যাপেবার্তা পাঠানো। যিনি কোনও লেখাপড়াই শেখেন নি তেমন ব্যক্তিও জানেন কেমনভাবে হোয়াট্‌সঅ্যাপে বার্তা পাঠাতে হয় বা আসে, ফরওয়ার্ড কীভাবে করতে হয়, কীভাবে তা ঢোকে। শুধুএটাই নয়, টেকনোলজি দিনে দিনে এত সরল হয়ে যাচ্ছে যে এই কাজের জন্য কোনও বড় স্মার্টফোনেরও প্রয়োজন নেই। সাধারণ বৈশিষ্ট্য-সহ যে ফোন পাওয়া যায়, তাতেও ক্যাশট্রান্সফার হতে পারে। ধোপা হোক বা শাকসব্জী, দুধ, খবরের কাগজ, চা, ছোলা বিক্রেতা হোক– সবাই অনায়াসে এটা ব্যবহার করতে পারে। আর আমিও এই ব্যবস্থাকে আরও সরল করার উপরজোর দিয়েছি। সব ব্যাঙ্ক এতে সামিল হয়ে কাজটা করছে। আর এখন তো আমরা ওই অনলাইনসারচার্জের যে খরচ, তাও বাতিল করে দিয়েছি। আরও এইরকম কার্ড ইত্যাদির যে খরচা হত,সেগুলো আপনারা দেখেছেন গত দু-চারদিনের খবরের কাগজে, সব খরচ বাতিল করে দিয়েছি, যাতে‘ক্যাশলেস সোসাইটি’ আন্দোলনকে শক্তি যোগানো যায়।

আমার তরুণ বন্ধুরা, এতসব হওয়ারপরেও একটা গোটা প্রজন্ম এমন রয়েছে, যাঁরা এইসব ব্যাপারের সঙ্গে অপরিচিত। আর আপনারাসবাই, আমি ভালো ভাবেই জানি, এই মহান কাজে সক্রিয় রয়েছেন। হোয়াটস অ্যাপে যে ধরনেরক্রিয়েটিভ ম্যাসেজ দেন আপনারা – স্লোগান, কবিতা, গল্প, কার্টুন, নতুন নতুন কল্পনা,হাসি-ঠাট্টা – সব কিছুই দেখছি, আর চ্যালেঞ্জের মুখে তরুণ প্রজন্মের এই যে সৃজন শক্তি,এ দেখে মনে হচ্ছে, যেন এই ভারতবর্ষের বিশেষত্বই হলো যে কোনও এক যুগে যুদ্ধেরময়দানে ‘গীতা’র জন্ম হয়েছিল। তেমনই আজ যখন এত বড়ো পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে চলেছিআমরা তখনই আপনাদের ভেতরের মৌলিক সৃষ্টিশীলতা প্রকট হচ্ছে। কিন্তু আমার প্রিয় তরুণবন্ধুরা, আমি আবার একবার বলছি, এই কাজে আপনাদের সাহায্য প্রয়োজন আমার এবং আমারবিশ্বাস, আপনারা, দেশের কোটি কোটি তরুণ এই কাজ করবেন। এক কাজ করুন আপনারা, আজথেকেই প্রতিজ্ঞা করুন যে আপনি স্বয়ং ‘ক্যাশলেস সোসাইটির এক অঙ্গ হবেন। অনলাইনখরচের যত প্রযুক্তি আছে তা ব্যবহার করবেন নিজের মোবাইল ফোনে। শুধু এইটুকুই নয়,প্রতি দিন আধ ঘণ্টা, এক ঘণ্টা, দু’ঘণ্টা সময় বের করে কম করে দশটা পরিবারকে বোঝাবেনএই প্রযুক্তি কী, কীভাবে ব্যবহার করতে হয়, কেমনভাবে নিজের ব্যাঙ্কের অ্যাপ ডাউনলোডকরতে হয়, নিজের অ্যাকাউন্টে যে অর্থ পড়ে আছে সেই অর্থ কীভাবে খরচা করা যায়, কীভাবেদোকানদারকে তা দেওয়া যায়। দোকানদারকেও শেখান কীভাবে ব্যবসা করা যায়। আপনিস্বেচ্ছায় এই ‘ক্যাশলেস সোসাইটি’-তে প্রবেশের, এই নোটের চক্কর থেকে সমাজকে বের করেআনার যে মহা-অভিযান, দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করার যে অভিযান, কালো টাকা থেকে মুক্তিপাওয়ানোর যে অভিযান, মানুষকে দুর্দশা আর সমস্যা থেকে মুক্ত করার যে অভিযান – তারনেতৃত্ব দিতে হবে আপনাকে। একবার মানুষকে RupayCard কীভাবে ব্যবহার করতে হয়, এটা আপনি শিখিয়ে দেবেন,তবে গরীব মানুষ আপনাকে আশীর্বাদ করবে। সাধারণ নাগরিককে এই ব্যবস্থা শিখিয়ে দিলে সেতার সব দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পেয়ে যাবে আর এই কাজে যদি হিন্দুস্থানের সব তরুণরাসামিল হয় তবে আমি মনে করি, সময় বেশি লাগবে না। এক মাসের মধ্যেই আমরা বিশ্বে একনতুন, আধুনিক হিন্দুস্থান হয়ে আত্মপ্রকাশ করতে পারি আর এই কাজ আপনি আপনার মোবাইলফোনের মাধ্যমে করতে পারেন। রোজ দশটা বাড়িতে গিয়ে করতে পারেন, রোজ দশটা পরিবারকে এইব্যবস্থায় যুক্ত করে করতে পারেন। আমি আপনাদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছি – আসুন, শুধুসমর্থন নয়, আমরা এই পরিবর্তনের সৈনিক হই আর পরিবর্তন ঘটিয়ে ছাড়ি। দুর্নীতি আর কালোটাকা থেকে দেশকে মুক্ত করার এই লড়াইকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যাব আর দুনিয়ায় এমন অনেকদেশ আছে যেখানে তরুণ প্রজন্ম সেই রাষ্ট্রের জীবনধারা বদলে দিয়েছেন আর এটা মানতেহবে যে পরিবর্তন যা আসে তা তরুণরা ও যুবকরাই আনেন, তাঁরাই বিপ্লব করেন। কেনিয়াউদ্যোগ নিয়ে M-PESA নামে এক মোবাইল ব্যবস্থা দাঁড় করিয়েছে, প্রযুক্তির ব্যবহার করেছে, M-PESA নাম দিয়েছে আর আজআফ্রিকার এই এলাকায় কেনিয়াতে পুরো ব্যবসা-বাণিজ্য এই অভিমুখে পরিবর্তিত হওয়ারপ্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছে। এক বড় বিপ্লব ঘটিয়েছে এই দেশ।

আমার তরুণরা, আমি ফের একবার,আবারও একবার প্রবল আগ্রহ নিয়ে আপনাদের বলছি যে আপনারা এই অভিযানকে এগিয়ে নিয়েচলুন। প্রত্যেকটা স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটি, এন-সি-সি, এন-এস-এস’কে গোষ্ঠীবদ্ধভাবে, ব্যক্তিগত স্তরে এই কাজ করার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছি আপনাদের। আমরা এইব্যবস্থাকে এগিয়ে নিয়ে যাই। দেশের পরম সেবার সুযোগ পেয়েছি আমরা, সুযোগ হারানো উচিৎনয়।

প্রিয় ভাই ও বোনেরা, আমাদের দেশের এক মহান কবি শ্রী হরিবংশরাই বচ্চনের আজ জন্মজয়ন্তী আর আজ হরিবংশরাই-জীর জন্মদিনে শ্রী অমিতাভ বচ্চন ‘স্বচ্ছতাঅভিযান’-এর জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। আপনারা দেখেছেন যে এই সময়ের সবথেকে জনপ্রিয়শিল্পী অমিতাভ-জী স্বচ্ছতা অভিযানকে খুব পরিশ্রম করে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। মনেহচ্ছে যে স্বচ্ছতার বিষয়টি ওঁর শিরায় শিরায় ছড়িয়ে গিয়েছে আর তাই তো নিজের পিতারজন্মজয়ন্তীতেও ওঁর স্বচ্ছতার বিষয়টি মনে এসেছে। হরিবংশ রাই-জীর একটি কবিতার পঙ্‌ক্তিএইরকম –

“মিট্টি কা তন,

মস্তি কা মন,

ক্ষণ ভর জীবন,

মেরা পরিচয়।’ (অর্থাৎ, মাটির শরীর, খুশি খুশি মন, ক্ষণিকেরজীবন, এই মোর পরিচয়।)

হরিবংশ রাই-জী এই ভাবেই নিজের পরিচয় দিতেন। ‘মিট্টি কা তন, মস্তি কা মন, ক্ষণভর জীবন, মেরা পরিচয়’ – এর সঙ্গে মিল রেখে ওঁর সুযোগ্য পুত্র শ্রী অমিতাভ-জী, যাঁরশিরায় শিরায় স্বচ্ছতা অভিযান ছড়িয়ে গিয়েছে, তিনি হরিবংশ রাই-জীর কবিতা ব্যবহার করেআমাকে লিখে পাঠিয়েছেন –

‘স্বচ্ছ্‌তন,

স্বচ্ছমন্‌,

স্বচ্ছ্‌ভারত,

মেরাপরিচয়।’ (অর্থাৎ পরিচ্ছন্ন শরীর,পরিচ্ছন্ন মন, পরিচ্ছন্ন ভারত, আমার পরিচয়)।

 

আমি হরিবংশ রাই-জীকে শ্রদ্ধাপূর্বক নমস্কার জানাই। ‘মন কী বাত’-এর সঙ্গেএইভাবে যুক্ত হওয়ার জন্য আর স্বচ্ছতার কাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য শ্রীযুক্তঅমিতাভ বচ্চনকে ধন্যবাদ জানাই।

আমার প্রিয় দেশবাসী, এখন তো ‘মনকী বাত’-এর মাধ্যমে আপনাদের চিন্তা, আপনাদের ভাবনা পত্রের মাধ্যমে, ‘মাই গভ’-এ,‘নরেন্দ্র মোদী অ্যাপ’-এ পৌঁছচ্ছে আর আপনাদের সঙ্গে জুড়ে রাখছে আমাকে। এখন তো বেলাএগারোটার সময় ‘মন কি বাত’ প্রচারিত হয় কিন্তু এই সম্প্রচার শেষ হওয়ার পর পরইপ্রাদেশিক ভাষায় এটা শোনানোর ব্যবস্থা শুরু হতে চলেছে। আমি আকাশবাণীর প্রতিকৃতজ্ঞ, এই নতুন উদ্যোগ যে ওঁরা নিয়েছেন, যাতে যে সব জায়গায় হিন্দি ভাষার প্রচলননেই, সেখানেও এর সঙ্গে যুক্ত হওয়ার সুযোগ পাবেন দেশবাসীরা। আপনাদের সবাইকে অনেকঅনেক ধন্যবাদ!