একটি উন্নত মানের বাজেটউপহার দেওয়ার জন্যে দেশের অর্থমন্ত্রী শ্রদ্ধেয় অরুণ জেটলিকে অনেক অনেক শুভেচ্ছাজানাই। এটা এমন একটা বাজেট, যা দরিদ্রদের ক্ষমতায়নের পাশাপাশি পরিকাঠামো মজবুতকরবে, দেশের অর্থব্যবস্থাকে নতুন শক্তি যোগাবে ও প্রত্যেকের মনে একটি নতুন আশারসঞ্চার করবে , উন্নয়ণকে গতিপ্রদান করবে । এই বাজেট হাইওয়ে নির্মাণের পাশাপাশি আইওয়েবৃদ্ধির অনুকূল, ডালের দাম থেকে শুরু করে Data – র স্পীড, রেলের আধুনিকীকরণ থেকে সরল অর্থনৈতিক বৃদ্ধির লক্ষ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ,শিক্ষা থেকে স্বাস্থ্য, শিল্পপতি থেকে শিল্পোন্নয়ন, Textile manufacturing থেকে Tax deduction প্রত্যেক ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের স্বপ্ন সফলকরার প্রয়াস এই বাজেটে স্পষ্ট প্রতীয়মান। এই ঐতিহাসিক বাজেটের জন্য অর্থমন্ত্রীরপাশাপাশি তাঁর টিমের প্রত্যেক সদস্যকে অভিনন্দন জানাতে হয়।

এই বাজেট বিগত আড়াই বছরেদেশের উন্নয়নের স্বার্থে যত পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, যত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, আরভবিষ্যতে আরও বলিষ্ঠ সব পদক্ষেপে এগিয়ে যাওয়ার মাঝে্র একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।পাশাপাশি সাধারণ বাজেটের সঙ্গে রেল বাজেটকে একসঙ্গে করায় দেশের সামগ্রিক পরিবহণ ব্যবস্থা Integrated planning – এর সুবিধায় বলীয়ান হয়ে উঠবে। রেল এখন আরও ভালভাবে দেশের সামগ্রিক পরিবহণ ব্যবস্থার নানা প্রয়োজনসাধনের কাজে লাগবে। এই বাজেট কৃষি,গ্রামোন্নয়ন, সামাজিক কল্যাণ এবং পরিকাঠামো উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। বিনিয়োগবৃদ্ধি আর কর্মসংস্থানের নতুন নতুন সুযোগ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সরকারের দৃঢ়সংকল্প এইবাজেটে স্পষ্ট প্রতীয়মান। এই সকল ক্ষেত্রে সারা দেশে সুষম বিনিয়োগের ব্যবস্থা করাহয়েছে, সরকারি বিনিয়োগকে পোক্ত করার জন্য সড়ক এবং রেল উন্নয়নে বিনিয়োগ অনেকটাবাড়ানো হয়েছে। দেশের কৃষক , গ্রাম ,গরিব , দলিত , পীড়িত ,শোষিতদের কথা মাথায় রেখে আগামী ২০২২ সালেরমধ্যে সরকার দেশের কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার লক্ষ্যে নীতি ও পরিকল্পনা গড়ে তোলাহয়েছে যাতে কৃষি, পশুপালন, গোপালন, মৎস্যচাষ, বৃষ্টিচ্ছায় এলাকা উন্নয়ন, স্বচ্ছ ভারতমিশনের মাধ্যমে গ্রামের আর্থিক উন্নয়নেরমাধ্যমে জীবনের মান অনেক উন্নত হবে। কর্মসংস্থান বাড়াতে বৈদ্যুতিন নির্মাণ বস্ত্র শিল্প ক্ষেত্রেবিনিয়োগের সুযোগ বাড়ানো হয়েছে। অসংগঠিত ক্ষেত্রেও বিনিয়োগের সুযোগ বাড়ানোর বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে । দেশের Demographic dividend কে দেশের উন্নয়নে যথাযথভাবে কাজে লাগাতে বাজেটে দক্ষতা উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে ।

মহাত্মা গান্ধী ন্যাশনালরুরাল গ্যারান্টি স্কিমের জন্যে অভূতপূর্ব রেকর্ড আর্থিক ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।বাজেটে নারীকল্যাণ খাতে, মা ও শিশুদের স্বাস্থ্য উন্নয়ন, কন্যাসন্তানদেরউচ্চশিক্ষাখাতে অর্থের যোগান বাড়ানো হয়েছে।

দেশের আর্থিক উন্নয়ণকেগতিপ্রদান করতে আর কর্মসংস্থান বাড়াতে আবাসন এবং নির্মাণ ক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এই বাজেটে গ্রামের পাশাপাশি শহুরে এলাকায় গৃহনির্মাণ ক্ষেত্রকে জোরদার করবে। রেলের যাত্রী নিরাপত্তা সুরক্ষিত করতে রেলওয়েসেফটি ফান্ডের যথাযথ ব্যবহার। এই বাজেটে রেল ও সড়ক পরিকাঠামো উন্নয়নে মূলধনী ব্যয় খাতে অধিক অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে।

ডিজিটাল অর্থনীতির জন্যে পূর্ণাঙ্গ প্যাকেজ ধার্য করা হয়েছে, ফলে কর চুরির সম্ভাবনা কমবে। দেশের অর্থব্যবস্থায় কালোটাকারপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। ডিজিটাল অর্থনীতি কে একটি মিশন হিসেবেগ্রহণ করে ২০১৭-১৮’তে দু’হাজার পাঁচশো কোটি টাকা ডিজিটাল লেনদেন খাতে বরাদ্দ করাহয়েছে। আমাদের অর্থমন্ত্রী কর প্রক্রিয়ায় সংস্কার ও সংশোধনের মাধ্যমে মধ্যবিত্তদেরস্বস্তি দিয়েছেন, নতুন নতুন শিল্প গড়ে ওঠার পরিবেশ গড়ে তুলেছেন, কর্মসংস্থানেরসুযোগ বৃদ্ধি করেছেন, বিভেদ দূর হবে আর ব্যক্তিগত বিনিয়োগে উৎসাহ বাড়বে।

বাজেটে ব্যক্তিগত আয়করহ্রাসের ঘোষণা দেশের মধ্যবিত্ত নাগরিকদের খুশি করবে। ১০ শতাংশ থেকে একেবারে ৫শতাংশ করে দেওয়া অত্যন্ত সাহসী পদক্ষেপ। এর মাধ্যমে দেশের অধিকাংশ করদাতা উপকৃতহবেন। এভাবেই এই বাজেট আমার কালো টাকা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইকে এগিয়ে নিয়েযেতে সাহায্য করবে। আমাদের দেশে রাজনৈতিক দলের ফান্ডিং নিয়ে অনেকআলোচনা সমালোচনা হয়। আমাদের অর্থমন্ত্রী নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলি কিভাবেআর্থিক অনুদান সংগ্রহ করতে পারবে সে ব্যাপারে স্পষ্ট পরিকল্পনা ঘোষণা করে কালোটাকা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দেশের জনগণের আশা আকাঙ্খার অনুকূল পদক্ষেপ নিয়েছেন । দেশের ছোট ও মাঝারি শিল্পগুলিই সবচাইতে বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগকরে দেয় । প্রায় ৯০ শতাংশ । এই শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলিরদীর্ঘদিনের দাবি ছিল আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় সামিল হওয়ার জন্যে তাদের আয়কর ছাড় দেওয়াহোক । এবার বাজেটে তাদের দেয় কর ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ করাহয়েছে । আমার দৃঢ় বিশ্বাস , সরকারের এই সিদ্ধান্ত দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পগুলিকে বিশ্বে প্রতিযোগী হতে অনেক সাহায্য করবে।

এই বাজেট দেশেরউন্নয়নে এক মজবুত পদক্ষেপ। কর্মসংস্থান বাড়লে দেশের সম্পূর্ণ আর্থিক বিকাশেকৃষকদের আয়বৃদ্ধির পরিপূরক হয়ে উঠবে। নাগরিকদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নেরক্ষেত্রে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাসস্থান উন্নয়ন দেশের আর্থিক ক্ষতির ঝুঁকি না নিয়ে মধ্যবিত্তেরক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধির ব্যবস্থা করেছে। এভাবে এই বাজেট আমাদের দেশের উন্নয়নের গতিকেত্বরান্বিত করে আমাদের ভবিষ্যতকে সুনিশ্চিত করবে। আমাদের নতুন প্রজন্মের ভবিষ্যত,কৃষকদের ভবিষ্যত, দলিত, পীড়িত, শোষিত, বঞ্চিত, নারীদের ভবিষ্যতকে সুনিশ্চিত করবে । T তে Transparency স্বচ্ছতা, প্রযুক্তির উন্নয়ন, আধুনিক ভারত নির্মাণেরস্বপ্ন ; U তে UrbanRejuvenation শহরের উন্নয়নেরজন্যে ; আর R দিয়ে RuralDevelopment গ্রামোন্নয়নের জন্য ; আর E দিয়ে নবীন প্রজন্মের জন্য Employment বা কর্মসংস্থান নবীনশিল্পোদ্যোগীদের জন্য Internship বৃদ্ধির মাধ্যমে অধিককর্মসংস্থানকে উৎসাহপ্রদান করার জন্যে আমি অর্থমন্ত্রীকে আরেকবার কৃতজ্ঞতাজানাই। দেশবাসীর স্বপ্ন বাস্তবায়নেরলক্ষ্যে এই বাজেট একটি বড় সহায়ক ব্যবস্থা হয়ে উঠে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে, উন্নয়নেরনতুন উচ্চতা অতিক্রমের ক্ষেত্রে দেশে একটি নতুন আস্থার পরিবেশ গড়ে তুলবে ইতিবাচকভূমিকা নেবে। এটা আমার বিশ্বাস। আমি আরেকবার অর্থমন্ত্রী , অর্থমন্ত্রক ও গোটা টিমকে অন্তর থেকে অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা জানাই ।